হালের প্রমথ চৌধুরীগণ এবং জাতীয় বোবাকরণ প্রকল্প

আরমান

বঙ্গদেশের গণমানুষের মানুষের বয়ান যে অপরিণত, চিন্তা যে স্টেপ বাই স্টেপ আগায় না, পরিণতিতে পৌঁছায় না, এমনকি শিক্ষিত হইলেও; তার অন্যতম কারণ, তারা ভাষার বিভিন্ন মাত্রার সাথে পরিচিত না; ফলে কল্পনায় তারা ওইসব মাত্রায় বিচরণ করতে পারেন না; ফলে সেই মাত্রাগুলি ভাষাও পায় না; ফলে বয়ানও তৈরি হয় না, ন্যারেটিভও গইড়া ওঠে না।

তাদের ভাষায় যেহেতু-সেহেতু, তাই, অতএব, এজন্য-র স্বতঃস্ফূর্ত প্রয়োগ নাই। তাদের মুখে ওইসব আসেই না। হেতু ও কারণ দাঁড় করাইয়া করাইয়া তারা কথা আগাইতে পারেন না। ইসমে মাওসুলের ব্যবহারের মাধ্যমে বিস্তারিত একটা বাক্য দেইখা তারা ভয় পান। একই বাক্যে মূল প্রসঙ্গ, তার ভূমিকা ও উপসংহার একলগে উপস্থিত দেইখা তারা পিছু হটেন। বলেন, কঠিন; বলেন, সহজ কইরা লেখো; বলেন, ঠিক বুঝলাম না।

এইসব ভাষার ক্রাইসিস। একটা ভাষার গণমানুষের এভারেজ ভাষাজ্ঞান এতটা নিম্ন পর্যায়ের হওয়া একটা ভয়ানক সংকট। এর ফলে উনারা আজীবন শাসিতই থাইকা যাইবেন। লেখকদের উচিত, এই সংকট মোকাবেলায় তাদের প্রকল্প ও কার্যক্রম জারি রাখা। ভাষারে বয়ানবান্ধব কইরা তোলা। প্রতিটা বিষয়ে ভাবপ্রকাশের এমন কতক উপায় ও ধারা প্রচলিত করা, যেই ধারায়, যেই ফর্মে কথা বললে গণমানুষ তাদের মনের ভাব স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও অ্যাকুরেট ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন।

কিন্তু দেখা যাইতেছে, কতিপয় ‘সহজবাদী’ লেখক ও অনুবাদক উলটা এই সংকটের পালে হাওয়া দিতেছেন। উনারা বাংলা ভাষার সিনট্যাক্স, বিষয়ের সঙ্গে সিনট্যাক্সের যোগাযোগ, বিষয়ভেদে সিনট্যাক্সের হাবভাব ইত্যাদি সম্পর্কে অচেতন এবং মুখস্থ কিছু ধারণা সবখানে ফলাইতে তৎপর।

যেমন বাংলা ভাষায় বাক্যে শব্দের স্থান অদলবদল করা যায়; এইটা একটা সুবিধা। কিন্তু একইসাথে এইটা একটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজও বটে। কারণ তখন বিষয়ের সঙ্গে এই ক্রমবিন্যাসের সামঞ্জস্য রক্ষা করাও জরুরি হইয়া পড়ে। মুখস্থ একটা ফর্ম সবখানে আমদানি করলে চলে না। আপনার হাতে যখন একটা স্টাইল, তখন সেইটা দিয়া সব উপলক্ষ্যেই কাজ চালাইতে পারেন। কিন্তু যখন দশটা স্টাইল, তার মানে উপলক্ষ্যভেদে আপনার সবচেয়ে উপযুক্তটা বাছাই করা লাগবে।

‘গরু একটি গৃহপালিত প্রাণী’ দিয়া গরুর রচনা শুরু করা যায়; কিন্তু ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ’ দিয়া সংবিধান রচনা শুরু করলে তা হাস্যকর ও আলগা জ্ঞান ঠেকে।

গদ্যরে বিষয়-উপযোগী হইতে হয়। সহজবাদী লেখক-অনুবাদকগণ নির্দিষ্ট একটা ফর্মরে, বিশেষত ছোটো বাক্যে লেখা গদ্যরে এতটা মহিমান্বিত করতেছেন যে, সকল বিষয়রে তারা নির্দিষ্ট একটা ফর্মে ব্যক্ত করতে চাইতেছেন এবং সকল বিষয়ের ঘাড়েই ওই ফর্ম আরোপের দাবি তুলতেছেন। এভাবেই নাকি ভাষা উড়বে। উনারা যোগ-বিয়োগ কইরা দাঁড় করাইছেন যে, ছোটো বাক্য সমান সহজ ভাষা; ভারী একটা বিষয়রে আমরা ঘরোয়া উপমার মাধ্যমে সহজে বুঝাইতে পারি। অথচ এইসব নির্ণয় সর্বাংশে সত্য না।

ছোটো বাক্যের বিষয় আলাদা। বড়ো বাক্যেরও বিষয় আলাদা। কাউরে যখন ছোটো বাক্যে লেখার আদেশ করা হয়, তখন এর মাধ্যমে তারে ছোটো-বাক্য-উপযোগী বিষয়ও বাইন্ধা দেওয়া হয়, একটা নির্ধারিত গণ্ডির বাইরে যাইতে মানা করা হয়।

ছোটো বাক্যের বিষয় ছোটো বাক্যে লেখাই স্বাভাবিকতা; এর বিপরীত করলে তা বাচালতা। বড়ো বাক্যের বিষয় বড়ো বাক্যে লেখাই সহজতা; এর বিপরীত করলে, একটা দশাসই বিষয়রে ঠেসেপুরে ছোটো বাক্যের ভিতর ঢুকাইলে তা অস্বাভাবিকতা, সাংকেতিকতা ও দুর্বোধ্যতা। বড়ো বাক্যের যে উদ্‌ঘাটন, যে পলিটিক্স, তা ছোটো বাক্য অর্জন করতে পারবে না। ভারী বিষয়ের শরীর উপমা দিয়া ধরতে চাইলে তা হবে অন্ধের হাতি দেখার মতন, আংশিক।

এজন্য উনাদের এহেন চিন্তা ও কর্মের পয়লা ক্রাইসিস হইতেছে ভাষিক ক্রাইসিস। এই যে উনারা সহজতার সূত্র আবিষ্কার করতে গিয়া একটা জিনিসরে যোগ-বিয়োগের মতো কইরা ঠাওরাইয়া লইছেন, এর ফলে উনাদের ভাষা হইয়া পড়তেছে অস্বাভাবিক আঁটোসাঁটো, রূপক ও অতিমাত্রায় সাংকেতিক।

উনাদের ভাব যখন ভাষা পায় না, তখন তা উপমার দিকে হাত বাড়ায়। আলবাত্তা এমন যদি হয় যে, ভাষা থাকার পর উনারা উপমার দিকে হাত বাড়াইছেন, তাহলে সেটারে পরিকল্পিত বা সৃষ্টিশীলতা বলা যায়। বুইঝা লইতে পারি, কথাসাহিত্যের স্বার্থে কিংবা নিজস্ব পলিটিক্স বাস্তবায়নে উনাদের এহেন কর্ম। কিন্তু যদি এমন হয় যে, ভাষা না পাইয়া উপমার দিকে হাত বাড়ানো হইছে, এবং ভাষা খোঁজার তালে না থাইকা উলটা এই অক্ষমতারে সেলিব্রেট করা হইতেছে, ওইটারেই একটা স্টাইল আকারে রেওয়াজ দেওয়া হইতেছে, তাহলে এটা একটা বিরাট ভাষিক ক্রাইসিস। কারণ এখানে স্বাভাবিকতারে সৃষ্টিশীলতা দিয়া রিপ্লেস করা হইতেছে। এর ফলে বঙ্গের মানুষ ভাষা হারাবেন।

আমজনতা তাদের দৈনন্দিন ভাষায় সৃষ্টিশীল হইতে পারবেন না, তার প্রয়োজনও নাই। আসলে কারোরই নাই, সবখানে সৃষ্টিশীলতা ফলানোই বরং দুষ্টতা। সবার আগে দরকার একটা যথার্থ, মোক্ষম, অ্যাকুরেট ও সহজাত ভাষা, একটা স্বাভাবিক প্রকাশক্ষমতা। এটা জরুরিয়ত। আর সেটার পাশাপাশি রূপকের মাধ্যমে, সংকেতের মাধ্যমে, ইঙ্গিতের মাধ্যমে এবং নানান উপায়ে সৃষ্টিশীলতা আনয়ন হইতেছে বিশেষ প্রয়োজনীয়তা। এইটা জরুরিয়ত না, তাহসিনিয়ত।

কিন্তু এই লেখক-অনুবাদকগণ তাহসিনিয়ত দিয়া জরুরিয়তের কাজ চালাইতে চান। এর মাধ্যমে আমজনতার সামনে তারা কেবল দুইটা অপশনই খোলা রাখেন : হয় সৃষ্টিশীল ভাষায় কথা কও; নাহলে কথাই কইয়ো না। উনারা আমজনতারে ভাষার জোগান দেন না, দেন কতগুলি উপমা আর রূপকের জোগান, যা পদে পদে দ্ব্যর্থবোধকতা তৈয়ার করে, কোনোভাবেই স্পষ্ট ও অ্যাকুরেট মর্ম প্রকাশ করে না, বরং কখনো কখনো তা ভাষাহীনতারই ভাষিক প্রকাশ, বলতে না পারারেই বলা হইয়া দাঁড়ায়।

প্রমথ চৌধুরীর এমনই একটা প্রবন্ধ হইতেছে : ‘সাহিত্যে খেলা’। সুধারণাবশত ভাবব, উনার যথেষ্ট ভাষা ছিল। কিন্তু উনি যেই সংকেত আর উপমাজর্জরিত পথ দেখাইছেন, উহা সরল পথ নহে। উহা দ্বান্দ্বিক সাত মাথার মোড়। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ভাষায়, চরমপন্থা।[1]প্রবন্ধ : আমাদের ভাষাসমস্যা; লেখক : ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পড়তে এই লিংকে যান … Continue reading

ওই পথে, ওই প্রবণতায় চলতে গেলে মানুষ ভাষা পাবেন না, কিংবা পাইলেও উপেক্ষা করবেন; তার জায়গায় উপমারে মহিমান্বিত করবেন, সবকিছু উনারা সংকেতে প্রকাশ করতে চাইবেন, রূপক দিয়া আসল ধরতে চাইবেন। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণস্বরূপ এই মুহূর্তে মনে পড়তেছে একজন সিনিয়র শ্রদ্ধাভাজন তরজমাকারের কথা, উপযুক্ত বিষয়ে যার কাছে আমি অশেষ ঋণী, সূরা মুলকের ‘মুলক’ শব্দটার তরজমা উনি করছিলেন ‘নাটাই’, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অর্থে; যেহেতু নাটাই যার হাতে, ঘুড়ির নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। এমন না যে উনি আসল শব্দটা জানেন না বা অপরিকল্পিতভাবে লেখছেন, কিন্তু এই যে রূপকের দিকে যাত্রা, এটা ওই প্রবণতার ফসল।

উক্ত তরজমার সমস্যা হইল, এখানে বিষয়ের তরজমা করা হইতেছে বস্তু দিয়া। অথচ বিষয় সক্ষম; বস্তুর মধ্যে সক্ষমতা থাকলেও অক্ষমতাও আছে। বৃত্তে খুঁত থাকলেও বৃত্তের ধারণায় কোনো খুঁত নাই। এজন্য বৃত্তের তরজমা আমরা ফুটবল দিয়া করব না, যথাসম্ভব বৃত্ত দিয়াই করব। ক্ষমতা একটা বিষয়, ক্ষমতা নামক বিষয়ে ক্ষমতার ভাগ শতভাগ, সেখানে এক ভাগও অক্ষমতা নাই। কিন্তু নাটাই, স্টিয়ারিং, হ্যান্ডেল ইত্যাদি ক্ষমতা প্রকাশ করলেও তাতে অক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার ভাগও আছে।

এই প্রবণতা রবীন্দ্রনাথ থেকে নিয়া আজতক বহমান। রবীন্দ্রনাথের ভাষাব্যবহারে অশেষ দক্ষতা ছিল, উনি হয়তো কাব্যিকতার মাধ্যমে, ব্ল্যাকহোলের ছবি তোলার ধরনে চারদিক থেকে শব্দের ঘেরাও দিয়া কেন্দ্ররে একটা বলয়, একটা আবহ, একটা আকার দেওয়ার মাধ্যমে উতরাইয়া গেছেন। কিন্তু এইটাই যখন প্রধান হইয়া উঠবে, এইটাই যখন সবখানে, বিষয়-অবিষয় নির্বিশেষে, ঢালাওভাবে প্রবণতা আকারে হাজির হবে, ট্রেন্ড হইয়া উঠবে, তখন অ্যাকুরেট ভাষা খোঁজার প্রয়াস চাপা পড়বে এবং তা উদ্‌যাপন-অযোগ্য চেষ্টায় পরিণত হবে। রূপক নামক রঙিন ছেলেভুলানো খেলনা লইয়াই খুশি থাকা লাগবে বঙ্গভাষীর। কিংবা সংকেত নামক মরীচিকার দিকেই যাত্রা করা লাগবে।

আর সাধারণ বঙ্গভাষী যেহেতু অহরহ ওইসব রূপক ও সংকেতধর্মী সৃষ্টিশীলতা ফলাইতে পারবেন না, আবার অ্যাকুরেট ভাষাটাও তাদের জানা থাকবে না, সেহেতু উনারা গণহারে বোবা হইবেন। ফলে উনারা হয় চুপ থাকবেন, নাহয় মিথ্যা বলবেন, বা দ্বান্দ্বিকতা উৎপাদন করবেন, কিংবা আধাকচড়াভাবে আমতা-আমতা করবেন। গণমানুষ এরকম ভাষাহীন হওয়ার ফলে এভারেজ লেখকগণও ভাষা হারাবেন; একটা পর্যায়ে উনারাও রূপক আর সংকেত দিয়া আসল ধরতে চাইবেন।

সর্বত্র ছোটো বাক্য ফলানোর আরেকটা সমস্যা হইতেছে, এর মাধ্যমে রচনারে ‘বয়স্ক শিশুসাহিত্য’ বানানো হয় এবং পাঠকরে বানানো হয় প্রাপ্তবয়স্ক শিশু। সর্বত্র শিশুসাহিত্য ফলানো হাস্যকর রকম দুষ্টতা। ভারী বিষয়ে, যেখানে একেকটা বাক্য একেকটা সামগ্রিক ভাব লইয়া হাজির, একেকটা উত্থান ও পতন এবং প্রসঙ্গ ও পরিণতি লইয়া হাজির, সেখানে ছোটো বাক্য ফলাইতে গেলে, বাক্যে-বাক্যে যে সাবলীল যোগাযোগ দরকার তা হারাইয়া যায় কিংবা হইয়া পড়ে লুপ্ত। বিষয়টা হাতেকলমে দেখানো যাক।

মুসলিম উম্মাহর পতনে বিশ্বের কী ক্ষতি হলো বইয়ের একটা জায়গা এরকম :

সহিহ ইলম ও আমল এবং বিশুদ্ধ জ্ঞান ও কর্ম ছিলো এত দুর্লভ এবং আল্লাহপ্রেমিক ও সত্যপথের পথিক যারা তাদের অস্তিত্ব ছিলো এতই বিরল যে, পারস্যের সাহসী যুবক সালমান ফারসি, যিনি স্বজাতির অগ্নিপূজার ধর্মের প্রতি আস্থা হারিয়ে সত্যধর্মের সন্ধানলাভের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছিলেন, তিনি ইরান থেকে শামের শেষ সীমা পর্যন্ত সুদীর্ঘ সফরকালে মাত্র চারজন এমন ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছিলেন, যারা নবি-রাসুলদের রেখে যাওয়া পথের ওপর অবিচল ছিলেন এবং যাদের দ্বারা তার বেচাইন কলব ও রুহ কিছু সুকুন ও ইতমিনান লাভ করেছিল এবং তার অস্থির হৃদয় ও আত্মা কিছুটা শান্ত ও তৃপ্ত হয়েছিল।[2]বই : মুসলিম উম্মাহর পতনে বিশ্বের কী ক্ষতি হলো; লেখক : সাইয়িদ আবুল হাসান আলি … Continue reading

পুরা নব্বই শব্দের একটা বাক্য, কিন্তু আবৃত্তি মোটেই বাজে না। বরং পড়ার সময় আমরা পর্যাপ্ত বিরতি পাই, গদ্যের বাঁক আন্দাজ করতে পারি। ‘এত দুর্লভ’ ও ‘এত বিরল’ অংশ-দুইটা সুর তোলে, আমরা এর শেষ লহরি শুনতে চাই, আর তা শেষ করে বাক্যের বাকি অংশ। আবার সেই বাকি অংশের ভিতরেও ‘যিনি’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে, আর ‘তিনি’ তার সমাপ্তি টানে। একইভাবে ‘এমন’ প্রসঙ্গ তোলে, আর ‘যারা’ তার পরিণতি টানে। কিন্তু এটারে যদি ছোটো বাক্যে ভাইঙা লেখি এভাবে :

সহিহ ইলম ও আমল ছিল দুর্লভ। বিশুদ্ধ জ্ঞান ও কর্ম ছিল দুষ্প্রাপ্য। আল্লাহপ্রেমিক ও সত্যপথের পথিকদের অস্তিত্ব ছিল বিরল। পারস্যের সাহসী যুবক ছিলেন সালমান ফারসি। স্বজাতির অগ্নিপূজার ধর্মের ওপর থেকে মন উঠে গিয়েছিল তার। সত্যধর্মের খোঁজে তিনি হয়ে পড়েছিলেন অস্থির। সফর করেছিলেন ইরান ও শামের সীমান্ত পর্যন্ত সুদীর্ঘ পথ। এই দীর্ঘ সফরে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন মাত্র চারজন ব্যক্তি। নবি-রাসুলদের রেখে যাওয়া পথে অবিচল ছিলেন যারা। তাদের সান্নিধ্যে তার বেচাইন কলব সুকুন পেয়েছিল, ইতমিনান লাভ করেছিল। আর হৃদয় ও আত্মা হয়েছিল শান্ত ও তৃপ্ত।

তাহলে আসলে কোনো কাজের কাজ হয় না, বরং গদ্য তার স্বাভাবিক মেজাজ হারায়, বাক্যে-বাক্যে যোগাযোগ হারায়। আগের গদ্যে যেরকম বাক্যের অংশগুলির মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত ছিল, তার বিপরীতে এই গদ্য বারবার হোঁচট খায়। এরকম গদ্য হইতেছে শিশুর ছাড়া-ছাড়া কথার মতন, যে অনেক কিছু বলে, কিন্তু সবটা সাজাইয়া পুরা একটা কথা বইলা উঠতে পারে না, যা শ্রোতার মনে একটা সম্পূর্ণ ভাবের সৃষ্টি করবে।

এই গদ্য, খানিক পরপর দাঁড়ি বসানোর দরুন এবং সংযোজক শব্দগুলিরে বহিষ্কার করার দরুন, আগের বাক্যের সঙ্গে পরের বাক্যের যোগাযোগ কী, তা দেখাইয়া দেয় না, যা দেখাইয়া দেয় আগের গদ্য—যিনি-তিনি, এমন-যারা, ইত্যাদি সংযোজক শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে। এই যে বাক্যে-বাক্যে যোগাযোগহীনতা, এর কারণে এখানে একটা-একটা বাক্য সহজ মনে হইলেও পুরা বক্তব্যটা ধইরা উঠতে পাঠকের বাড়তি শ্রম দেওয়া লাগে। তাই এই গদ্য সহজ হইয়াও কঠিন।

এই গদ্যের সমস্যা হইতেছে, এখানে লেখকের মূল বক্তব্যই হারাইয়া গেছে। লেখকের উদ্দেশ্য ছিল সত্যপন্থিদের অস্তিত্ব কতটা বিরল হইয়া পড়ছিল তার মাত্রা দেখানো। তার বদলে এই গদ্য বড়ো কইরা তুলছে সালমান ফারসির গল্প।

আরও সমস্যা হইতেছে, এখানে প্রতিটা বাক্যই স্বতন্ত্র সংবাদ বা প্রসঙ্গ হইয়া দাঁড়াইছে, যেন প্রতিটা বাক্যই প্রধান। অথচ বক্তব্যের মধ্যে কোনটা মুখ্য, কোনটা গৌণ, তার পার্থক্য দৃশ্যমান রাখা লাগবে।

এখানে ভাবের কাঠামো মূলত এরকম, ‘বিশুদ্ধ জ্ঞান ও কর্ম এতই দুর্লভ, সত্যপন্থিদের অস্তিত্ব এতই বিরল যে, সালমান ফারসি এত বিস্তৃত ভূখণ্ডে মাত্র চারজন কাঙ্ক্ষিত মানুষের দেখা পাইছেন।’ এই কাঠামোর অধীনে বাক্যের মাঝে মাঝে যে সালমান ফারসির সংক্ষিপ্ত পরিচয় আসছে, তার দীর্ঘ সফরের কথা আসছে, এগুলা সব আসছে বাক্যের অনুষঙ্গ হিসাবে, প্রাসঙ্গিক বক্তব্য হিসাবে, মূল বক্তব্যরে জোরালো করতে; স্বতন্ত্র প্রসঙ্গ হিসাবে না যে তার জন্য আলাদা বাক্য দরকার। এই কারণে যখন আমরা পড়ি—‘সহিহ ইলম ও আমল ছিল দুর্লভ। বিশুদ্ধ জ্ঞান ও কর্ম ছিল দুষ্প্রাপ্য। আল্লাহপ্রেমিক ও সত্যপথের পথিকদের অস্তিত্ব ছিল বিরল। পারস্যের সাহসী যুবক ছিলেন সালমান ফারসি। স্বজাতির অগ্নিপূজার ধর্মের ওপর থেকে মন উঠে গিয়েছিল তার।’—তখন হঠাৎ করে বক্তব্যের মধ্যে সালমান ফারসি আসার কারণ আমরা বুইঝা উঠতে পারি না, অপ্রাসঙ্গিক ঠেকে। কারণ ওইটাই যে, এখানে বাক্যের অনুষঙ্গরে স্বতন্ত্র প্রসঙ্গের মর্যাদা দেওয়া হইছে। তাই মনে হয়, মূল বর্ণনাধারায় ছেদ পইড়া নতুন প্রসঙ্গের সূত্রপাত ঘটল।

বড়ো বাক্য দেখলেই যিনি এই ধরনের ভাঙচুর চালান, তিনি হয়তো বড়োজোর মানসিক তৃপ্তি পাইতে পারেন, কিন্তু এর ফলে গদ্য সুন্দর হয় না। তাহলে আরও সংক্ষেপ করতেছি না কেন!—

সহিহ ইলম ও আমল—দুর্লভ। বিশুদ্ধ জ্ঞান ও কর্ম—দুষ্প্রাপ্য। আল্লাহপ্রেমিক ও সত্যপথের পথিক—বিরল। সালমান ফারসি। যুবক। সাহসী। বিরক্ত স্বজাতির অগ্নিপূজায়। আস্থা হারালেন নিজ ধর্মে। অস্থির। সত্যধর্মের খোঁজে। সফরে বেরোলেন। ইরান থেকে শামের সীমান্ত। সুদীর্ঘ পথ। খুঁজে পেলেন মাত্র চারজন। যারা অবিচল। নবি-রাসুলদের রেখে যাওয়া পথে। গেলেন তাদের সান্নিধ্যে..

হইতে পারে এরকম গদ্যেরও উপযুক্ত ক্ষেত্র আছে। কিন্তু তাবৎ বিষয়রে এভাবে ছোটো বাক্যে বাইন্ধা ফেলার প্রবণতা বাংলাভাষার সাবালকত্বের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে সকল বিষয় হইয়া পড়ে শিশুসুলভ। গদ্য পরিণত হয় অপরিণত শব্দপাতে।

এই প্রবণতার দোসরা ক্রাইসিস হইতেছে চিন্তাগত ক্রাইসিস। আমরা ভাষা দিয়া চিন্তা করি। ভাষার নানান মাত্রা, নানান ফর্ম, নানান স্টাইল, নানান ব্যবহার আমাদের চিন্তার জোগান দেয়; তার মানে আমাদের চিন্তা এগুলি দ্বারা প্রভাবিত হয়। ভাষা অথর্ব হইলে চিন্তাও অথর্ব হইতে বাধ্য। ভাষা মুখস্থ হইলে চিন্তাও মুখস্থ হইতে বাধ্য। ভাষা রূপকধর্মী হইলে, সাংকেতিক হইলে, চিন্তাও একটা রূপক ও সংকেত দাঁড় করাইয়া খুশি। যার ভাষা ছোটো বাক্যের ওপরে উঠতে পারে না, সে বড়ো একটা ভাবরে, একযোগে, অখণ্ডভাবে ও সমস্ত প্রকারে ধইরা উঠতে পারে না।

তরজমাকারগণ নাখোশ হইয়া বলবেন, আমরা তো বড়ো একটা ভাবরে ছোটো ছোটো বাক্যের গদ্যে বেশ লেখতে পারি।

আলবত আপনারা পারেন। কিন্তু মনে রাখা লাগবে, তরজমার সময় তরজমাকার অলরেডি চিন্তাপ্রাপ্ত। এমন না যে উনার তরজমার গদ্য দিয়া উনি মূলের সমমানের চিন্তা করছেন। বরং ভিনভাষার লেখকের চিন্তারে উনি পুনরায় নিজের মতো কইরা ভাবছেন এবং কাছাকাছি অর্থের হইলে সেটারে নিজের ভাষায় লেখছেন নিজের ইচ্ছামাফিক গদ্যে। এর দ্বারা এইটা প্রমাণ হয় না যে, ভিনভাষার সমান মৌলিক চিন্তা উনার নিজস্ব গদ্যে করা যায়। বরং প্রমাণিত হয়, ভিনভাষার চিন্তারে পাঠ কইরা, বুইঝা নিয়া, সেইটারে নিজের মতো কইরা কপি করা যায়। দুইটা দুই জিনিস।

এক্ষণে তরজমাকারের নাহয় একটা গতি হইল। কিন্তু এই প্রবণতার চর্চার দরুন বঙ্গভাষীর সামনে যেরূপ গদ্য উপস্থিত হবে, যার বাক্যের ভিতর কোনো মাত্রা নাই, কোনো তরঙ্গ নাই, কোনো উত্থান-পতন নাই, কোনো দোল নাই, বাঁক নাই, মোচড় নাই, কেবলই খানিক পরপর দাঁড়ির হোঁচট, কিংবা যেখানে খালি উপমা আর দ্ব্যর্থবোধক রূপক কথার সমাহার; সেরূপ অস্ফুট, অপরিণত, অবিকশিত আধো-আধো বোল লইয়া, গুহালিপির মতন ভাষা লইয়া, বঙ্গভাষী কী মানের চিন্তা করতে সক্ষম হইবেন?

ছোটো বাক্যে লেখা গদ্য দিয়া যে বুদ্ধিবৃত্তি চলে, তা অতিমাত্রায় সিদ্ধান্তপ্রবণ ও নীতিবাক্যসর্বস্ব হইতে বাধ্য। কারণ লেখক যখন ঠাওরাইয়া লইছেন যে, উনি এক বাক্যে একটা পরিমাণ শব্দের বেশি লেখবেন না, তখন ক্ষণে ক্ষণে উনার সিদ্ধান্তবাক্য উৎপাদন কইরা পথ চলতে হয়। এ ছাড়া তার আর কোনো উপায় থাকে না। এইটা গুরু বুদ্ধিজীবীর জন্য সুখকর হইলেও শিশু বুদ্ধিজীবীর জন্য বিপজ্জনক। কারণ এই ফর্মে মিথ্যা বলার সুযোগ অশেষ। অ আর কু দিয়া ভরা সিদ্ধান্ত উৎপাদন এবং তার ওপর ভিত্তি কইরা কথা সাজানো সহজ।

সাংকেতিক কথাবার্তা দিয়া যে বুদ্ধিবৃত্তি চলে, দিনশেষে তা দ্ব্যর্থবোধক আর অস্পষ্ট, ফলে তা লেখকের গা বাঁচানোর জায়গা, তার আড়াল। প্রমথ চৌধুরী লেখেন :

জড় পদার্থ নিয়ে একটা কিছু গড়তে হলে—আগে হতেই একটা plan এবং estimate করতে হয়; কিন্তু প্রাণ নিজের আকৃতি নিজে গড়ে নেয়, বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার রূপও ক্রমে স্পষ্ট হয়ে আসে। প্রকৃতি যে ফুল ফোটাবে, মানুষ তার সাহায্য করতে পারে কিংবা বাধা দিতে পারে, কিন্তু তাতে স্বকপোলকল্পিত বর্ণ, গন্ধ, আকার এনে দিতে পারে না। কাগজের ফুল রচনায় আমাদের যে স্বাধীনতা আছে, গাছের ফুল ভালো করে ফোটানোতে সে স্বাধীনতা নেই। 

এ পর্যন্ত তাও মানলাম, কিন্তু এরপর উনি যখন লেখেন :

আমাদের স্বদেশী সমাজের অক্ষয়-বটে নূতন পাতা দেখা দিয়েছে, আমাদের কর্তব্য এখন তার গোড়ায় প্রচুর সার এবং জল জোগানো, আর চারপাশের জঞ্জাল ও জঙ্গল দূর করা। [3]প্রবন্ধ : তেল, নুন, লক্‌ড়ি; লেখক : প্রমথ চৌধুরী

তখনই তা হইয়া পড়ে কচ্ছপের খোলস, ছাই দিয়া ধরতে গেলে লেখক যেখানে আশ্রয় লইবেন।

প্রমথ চৌধুরীগণ সাহিত্যের খেলা খেলতে থাকেন। সবারই কাগজ আর মগজ আছে। সব ধরনের লেখা ও খেলারই জরুরত আছে। কোনোটারে আমরা দাবাইতে বা দমাইতে চাই না। আমরা নির্দিষ্ট কোনো প্রবণতারে জাতীয়করণের বিরুদ্ধে এবং সেইটা যদি আমাদের নিজস্ব উদ্ভাবন হয়, তবুও। কারণ উহা সামরিকতা।

সেই সূত্রেই মনে করি, সহজতার নামে উনাদের এই স্টাইল যদি ভাষিক প্রবণতায় রূপ নেয়, তাহলে বাংলাভাষা আরও কষ্টার্জিত হবে; এবং সবকিছুরে ‘সংক্ষিপ্ত ও উত্তেজক’ বানাইতে গিয়া ভাষারে আরও পরিকল্পিতভাবে বনসাই বানানো হবে। বঙ্গভাষী না সহজতার দেখা পাবেন, না ভাবপ্রকাশের অ্যাকুরেট ভাষার খোঁজ পাবেন। দেখা যাবে, শব্দ না পাইয়া শক্তিমত্তা বুঝাইতে উনি তুলতেছেন হাতির আলাপ; আর নারীর কূটচালরে অ্যাকুরেট শব্দে বলতে না পাইরা শোনাইতেছেন জুলেখার গল্প। কিংবা সহজতার নামে যথাসম্ভব-ক্রিয়াহীন বাক্য লেখতে গিয়া মাসদারে[4]মাসদার : ক্রিয়াবিশেষ্য মাসদারে আকীর্ণ করতেছেন বাক্য। প্রতিটা মাসদারের পিঠে আবার চাপাইতেছেন একাধিক সিফাত-মাওসুফ[5]সিফাত : বিশেষণ; মাওসুফ : বিশেষণযুক্ত পদ আর ইজাফতের[6]ইজাফত : সম্বন্ধকরণ ভার। লেখতেছেন :

মহাজগতের চুলচেরা হিসেবের গুণ সম্বন্ধে আমাদের বর্তমান জ্ঞানের সেরা ব্যাখ্যা এটা। তা ছাড়া পরিকল্পনা ব্যাখ্যাকে সেরা ব্যাখ্যার সিদ্ধান্তে আসার প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা যায়। সেরা ব্যাখ্যার সিদ্ধান্তে আসার প্রক্রিয়াটি অজ্ঞতা থেকে দেওয়া যুক্তি না; বরং একঝাঁক উপাত্ত বা পারিপার্শ্বিক তথ্যকে সংগতিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করার অপরিহার্য উপায় অবলম্বনে দেওয়া এটা।[7]বই : দা ডিভাইন রিয়ালিটি; লেখক : হামজা জর্জিস; অনুবাদক : মাসুদ শরীফ; পৃষ্ঠা : ১৫১

এমন না যে বাক্যে মাসদার, সিফাত-মাওসুফ আর ইজাফতের ব্যবহার নিয়া আমাদের সমস্যা; কিংবা এসবের জরুরতরে আমরা অস্বীকার করতেছি। অস্বীকারপ্রবণতা বরং স্বতঃস্ফূর্ততার শত্রু। সমস্যাটা হইতেছে এরকম ঠাওরাইয়া লওয়া যে, ইসমে মাওসুল বা সিফাত-জুমলার ব্যবহার মাত্রই কঠিন বা বাহুল্য; বিপরীতে সিফাত-মাওসুফের ব্যবহার মাত্রই সহজ ও পরিমিত। এটাও একপ্রকার অস্বীকারপ্রবণতা। যখনই এরকম মুখস্থ ধারণা ঠাওরানো হইল, তখন ভাষা নামক বিমূর্ত বিষয়টারে মূর্ততা দানের চেষ্টা করা হইল।

শুকরিয়া যে খোদা মানবের হাতে ভাষা ব্যবহারের স্বাধীনতা দিছেন। এবং শুকরিয়া যে খোদা মানবের হাতে বাগানের ফুল ফোটানোর স্বাধীনতা দেন নাই। দিলে সমস্ত বাগিচা উজাড় হইত; আমরা বাগানহারা জাতি হইতাম।

তথ্যসূত্র:

তথ্যসূত্র:
1 প্রবন্ধ : আমাদের ভাষাসমস্যা; লেখক : ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পড়তে এই লিংকে যান : https://bacbichar.net/2024/01/art.7526.bb/
2 বই : মুসলিম উম্মাহর পতনে বিশ্বের কী ক্ষতি হলো; লেখক : সাইয়িদ আবুল হাসান আলি নদবি; অনুবাদক : মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ; পৃষ্ঠা : ১৩৫
3 প্রবন্ধ : তেল, নুন, লক্‌ড়ি; লেখক : প্রমথ চৌধুরী
4 মাসদার : ক্রিয়াবিশেষ্য
5 সিফাত : বিশেষণ; মাওসুফ : বিশেষণযুক্ত পদ
6 ইজাফত : সম্বন্ধকরণ
7 বই : দা ডিভাইন রিয়ালিটি; লেখক : হামজা জর্জিস; অনুবাদক : মাসুদ শরীফ; পৃষ্ঠা : ১৫১

বিজ্ঞাপন

Subscribe
Notify of
guest
6 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
টির্ধম
টির্ধম
1 year ago

আহা ভাই, তর্জমাকারগণের জন্য এটা অতি অতি মুফিদ রচনা। এইটা আমরা বিশেষ বললাম।

আনীসুল মুরসালীন
আনীসুল মুরসালীন
1 year ago

আমি বেশকিছুদিন যাবৎ অতিরিক্ত দাড়ি ব্যবহার করছিলাম বাক্যে, মানে ছোট ছোট বাক্য লিখে শেষ করে দিতাম, এটা পড়ার পর মনে হলো আরেকটু সচেতন হয়ে লেখা লাগবে এবং উপযুক্ততা খেয়াল করে তারপর বাক্য ছোট-বড় কোনো আকৃতিতে নিতে হবে ৷ শুকরিয়া জানাচ্ছি লেখককে ৷

শাওন আহমদ
শাওন আহমদ
1 year ago

পুরো প্রবন্ধটাই পড়লাম। খুব সুন্দর লিখেছ ভাই। ছোটো বাক্যে লেখা ও বড়ো বাক্যে লেখার স্থান অবশ্যই ভিন্ন। কিছু কিছু লেখা ছোটো বাক্যে সুন্দর কিন্তু তারমানে এটা না যে সব লেখা ছোটো বাক্য দিয়েই লেখতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বড়ো বাক্যের লেখা পড়তে ছোটো বাক্যের চেয়ে বেশি স্বাচ্ছদ্যবোধ করি। চমৎকার একটি প্রবন্ধ।

দুআ শুভ কামনা প্রিয় ভাই। তোমার লেখার নিয়মিত পাঠক হব ইন শা আল্লাহ।

Last edited 1 year ago by শাওন আহমদ
তালহা সাদিক
তালহা সাদিক
1 year ago

লেখকরে শুকরিয়া এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলো ফালানোর লাইগা

মুহাম্মদ উমর ফারুক
মুহাম্মদ উমর ফারুক
8 months ago

এই লেখাটা শরিফ ভাই প্রচার করছিলেন, দেখছিলাম। কিন্তু পড়তে আইসা একটু পড়ে আবার পড়ি নাই। এবার নিয়ত করছি, যোগাযোগ পইড়া শেষ করার। প্রথম আপনের প্রবন্ধটাই পড়ার নসিব হইল। অতি চমৎকার কথা বলছেন আপনি। আদীব হুজুরের লেখার উদ্ধৃতি এবং তার বড়বাক্যে লেখার যাথার্থ্য যেভাবে দেখাইছেন, তাতে তো ফিদা হয়ে গেছি ভাই।

মুহাম্মদ উমর ফারুক
মুহাম্মদ উমর ফারুক
8 months ago

আপনার প্রবন্ধের মান অনুযায়ী তো মন্তব্য করতে সক্ষম নই। কিন্তু বিশ্বাস করেন, প্রত্যেকটা কথাকেই নিজের মনে হয়েছে, আপন আরকি। আপনার চিন্তাভাবনা দারুণ। আদিব হুজুরের যেই বড়বাক্যটি দিয়ে নানানরকম উদাহরণ দিছেন এবং উপযোগী এবং অনুপোযোগিতার দিকগুলো চিহ্নিত করছেন, চমৎকার লাগছে।

অতি সহজ করতে গিয়ে আজকাল পাঠকরে একপ্রকার ধন্দে ফেলে দেওয়া যে শুরু হইসে, সেটা সুন্দর করে বুঝাইছেন।

স্বত্ব © ২০২৩, যোগাযোগ | ই মেইল : jogajogbd.org@gmail.com

যোগাযোগ-এ প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি কিংবা শিল্পকর্ম লেখক অথবা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা অবৈধ৷