রাম না হতেই নাকি রামায়ণ কাহিনীর জন্ম হয়েছিল, এমন কথা শাস্ত্রে আছে। শাস্ত্রের কথা জানিনে, তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই, এমন কি বিশাল ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান-ভারত রাষ্ট্র সৃষ্টির আগেই যে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সম্প্রতি এমন তথ্য আমাদের হাতে এসেছে।
সে ১৯১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের কথা। সবেমাত্র প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে, তদানীন্তন ভারতের বিখ্যাত নেতা মহাত্মা গান্ধী প্রশ্ন তুললেন, ভারত যদি স্বরাজ পায়, যা প্রায় অত্যাসন্ন বলে মনে হয়েছিল, তাহলে সারা ভারতে এমন একটি ভাষার প্রয়োজন হবে, যাকে ‘লিওয়াফ্রাঙ্কা’ বা সাধারণ ভাষা বলা যাবে। রাষ্ট্রভাষা শব্দটি তখনও এদেশে প্রযুক্ত হয়নি। চল্লিশ কোটি মানুষের দেশ ভারতবর্ষ, তার ভাষা-ভাষী সম্প্রদায়ের সংখ্যাও ছিল ১৭৯টি। তদুপরি ইংরেজী ছিল রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। ভারতবাসীরা ভাবতে শুরু করেছিল, এদেশ থেকে ইংরেজ বিদায় নিলে ইংরেজী ভাষাকেও বিদায় নিতে হবে। তখন তার স্থান দখল করবে কে?
মহাত্মা গান্ধী কবি রবীন্দ্রনাথের অভিমত চেয়ে চিঠি লিখলেন। জবাবে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন, “The only possible language for inter-provincial inter- course is Hindi in India.” (প্রভাত মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্র বর্ষপঞ্জী। অর্থাৎ “হিন্দি ছাড়া ভারতের আন্তঃপ্রাদেশিক সাধারণ ভাষা হওয়ার যোগ্য অন্য কোনো ভাষা নেই।”
এই চিঠির জওয়াবে মহাত্মা গান্ধী কিছু লিখেছিলেন কিনা আমাদের জানা নেই, তবে দেখা যায়, এর মাত্র দুই বছর পরে কবির (শান্তি নিকেতনের) বিশ্বভারতীতে সাধারণ ভাষাপ্রশ্নে এক মহাসভার আয়োজন হয় এবং তাতে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ‘ভারতের সাধারণ ভাষা’ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ পাঠ করেন। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন- বাংলা ভাষার বিশ্বকবি ‘সম্রাট’ নামে কথিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (মোসলেম ভারত, বৈশাখ, ১৩২৭)।
প্রবন্ধে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষাসহ উর্দু ও হিন্দি ভাষাকে এই আকাঙ্ক্ষিত সাধারণ ভাষার উপযোগী বলে অভিমত জ্ঞাপন করেন। যার ক্রম ছিল- ১. উর্দু, ২. বাংলা এবং ৩. হিন্দি। বলা বাহুল্য, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তখন সারা ভারতবর্ষে ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচিত হতেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তিনি সর্বপ্রথমে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব (Comparative Philology) বিষয়ে উচ্চতম ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। পরে ইনি ডক্টরেট ডিগ্রিও লাভ করেন। এই ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেবই আমাদের আজকের শতবর্ষের স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।
ভারতবর্ষের পশ্চিম বঙ্গ অঙ্গ-রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত চব্বিশ পরগনা জিলার বসীরহাট মহকুমার অন্তর্গত পেয়ারা গ্রামে আজ থেকে একশত বৎসর আগে (১৮৮৫ সালের ১০ই জুলাই) এক ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত পীর বংশে তাঁর জন্ম হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এম.এ. ডিগ্রি লাভের পর তিনি কিছুদিন স্কুল-শিক্ষকতা, ওকালতি ইত্যাদি পেশায় নিযুক্ত থাকার পর স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আহ্বানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে সহকারী গবেষক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন (১৯১১)। এই সময়ে তিনি কিছুদিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষার শিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন বলে জানা যায় (সুবর্ণ লেখা, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭৪)। পরে তিনি ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবন শিক্ষকতা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্তও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর এমিরিটাস হিসেবে কার্যরত ছিলেন। সে কথা এখানে অবান্তর, আমরা বাংলা ভাষা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার কথা বলছি। বলেছি, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যখন বাংলা ভাষাকে সমগ্র ভারতের সাধারণ ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন তখনও ভারত-পাকিস্তান বা বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন, স্বপ্ন হিসেবেই ছিল। তারপর আন্দোলন-বিক্ষোভ, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয় (১৪, ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭)। তারপরই আসে রাষ্ট্রভাষার কথা। পাকিস্তান ও ভারতের স্বাধীনতার পর বিশাল ভারত রাষ্ট্র বিনা দ্বিধায় রাষ্ট্রভাষারূপে দেবনারী হরফে লেখা হিন্দির দাবি মেনে নেয়, কিন্তু পাকিস্তান নামক ভূখন্ডে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে তুমুল বাক-বিতণ্ডা, বিপ্লব, বিক্ষোভ এমনকি খুন-খারাবি, রক্তপাত ইত্যাদি চলতে থাকে। প্রশ্ন ওঠে-রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে না বাংলা হবে?
বিশেষ করে ভারতে হিন্দি ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন ভাইস চ্যান্সেলর ডক্টর জিয়াউদ্দীন আহমদ যখন উর্দু ভাষাকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, সেই সঙ্গে সমগ্র পাকিস্তানের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবেও তার মর্যাদার দাবি পেশ করেন, তখন অগ্নিতে ঘৃতাহুতির মতো সারা পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলনের বহ্নিশিখা দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে।
এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন, ডক্টর জিয়াউদ্দীনের দাবি পাকিস্তান সরকারের আনুকূল্যে বহুল প্রচারিত হতে থাকলেও ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর আগে কোন রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান তার প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছিলেন বলে জানা যায় না। যতদূর জানা যায়, একাকী তিনিই সমকালীন ‘দি উইকলি’, ‘কমরেড’ ‘দৈনিক আজাদ’ ইত্যাদি পত্রিকায় অগ্নিগর্ভ ভাষায় প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন। যার ফলে বাংলা ভাষার পক্ষে আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ‘কমরেড’ পত্রিকায় তিনি বলেন, “To surrender Bengali to Urdu or Hindi as the language of the court and the University will be a shamful surrender of Bengal to an outsider which will be as bad as, if not worse that political subjugation”. (3rd Sep. 1947).
এরই প্রতিধ্বনি যেন শুনি ১২ই শ্রাবণ, ১৩৫৪ সালের আজাদ পত্রিকার একটি নিবন্ধে (পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা সমস্যা)। যাতে তিনি বলেন, “ডক্টর জিয়াউদ্দীন আহমদ পাকিস্তানের প্রদেশসমূহের বিদ্যালয়ে শিক্ষার বাহন রূপে প্রাদেশিক ভাষার পরিবর্তে উর্দু ভাষার পক্ষে যে অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন, আমি একজন শিক্ষাবিদ রূপে উহার তীব্র প্রতিবাদ জানাইতেছি। ইহা কেবল বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ও নীতি বিরোধীই নয়, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের নীতি বিগর্হিতও বটে।”
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেব প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না, কিন্তু জাতীয় স্বার্থে, তা সে ধর্মীয় হোক আর রাজনীতিতেই হোক, আঘাত লাগলে তিনি স্থির থাকতে পারতেন না। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ব্যাপারেও তাঁর সেই স্বাধীন চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন বলা যায়। ভাষাতত্ত্ববিদ শহীদুল্লাহ সাহেব বরাবরই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলে আসছিলেন। শুধু তা-ই নয়, শক্তি ও সামর্থ্যে বাংলা ভাষা যে এশিয়ার শ্রেষ্ঠতম মর্যাদার অধিকারী, এ কথাও তিনি বারবারই উল্লেখ করেছেন। এবার তার প্রতিষ্ঠার পালা।
তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হয় হোক, তাতে তাঁর আপত্তি নেই, কিন্তু সেই সঙ্গে বৃহত্তর পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষা-ভাষীদের জন্য বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো আপসের প্রশ্ন নেই। এ বিষয়ে তার যুক্তি পাকিস্তানের শতকরা ৫৬% ভাগ জনগণের ভাষা বাংলা। তাই মাতৃভাষা হিসেবে তো বটেই, উপরন্তু গণতান্ত্রিকতার দিক দিয়েও তার দাবিও অগ্রগণ্য।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? ঠিক এমনি সময়ে পাকিস্তানের নেতা কায়েদে আযম জিন্নাহ এলেন। তিনি এসে কার্জন হলের সভায় উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে অভিমত জ্ঞাপন করলেন। অগ্নিতে ঘৃতাহুতি প্রদত্ত হলো। সারা পূর্ব পাকিস্তান আবার নতুন করে জেগে উঠল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, পাকিস্তানি শাসকচক্র এই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে ধর্মীয় আবেগের দ্বারা পরিচালিত করতে চাইলেন। বুদ্ধি-বিবেক, যুক্তি-তর্কের মাথাও যেন খেয়ে বসলেন তাঁরা। এঁদের জবাবেও শহীদুল্লাহ সাহেব কথা বললেন-“যাহারা ধর্মের দোহাই দিয়া পাকিস্তানকে অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করিতে চাহেন, তাহারাই পাকিস্তানের দুশমন। ইহাই আমার বিশ্বাস।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই সময়ে আরবি হরফে বাংলা ভাষা প্রচলনেরও চেষ্টা শুরু হয়েছিল। এখানে আল-কুরআনের হরফের পবিত্রতার কথা বিশেষভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। শহীদুল্লাহ সাহেব তারও প্রতিবাদ করলেন জোরালো ভাষায়। কৌতূহলের ব্যাপার, ভাষা আন্দোলনের এক বিশেষ ক্ষণে ভাষাতত্ত্ববিদ শহীদুল্লাহ আর এক নতুন চাল চেলে বসলেন। তিনি ইংরেজি ভাষায় ১৪ দফা সম্বলিত এক দাবিনামা সমকালীন গণপরিষদে পেশ করলেন, যার মূলকথা হলো—বাংলা বা উর্দু নয়— পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে হবে সরাসরি আরবি ভাষা। তিনি এর স্বপক্ষে যে যুক্তি প্রয়োগ করলেন তা হলো এই যে, পবিত্র কুরআনে মাতৃভাষাতে নবি পাঠানোর কথা বলা হলেও আখেরি নবি আরব দেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন, ফলে আরবি ভাষাতেই পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল এবং সারা পৃথিবীব্যাপী মুসলমানগণ কুরআন পাঠ করেন ও কুরআন অনুসরণ করেন। তদুপরি মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ রাষ্ট্রের ভাষা আরবি এবং আরবি একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক ভাষা। তাই খাঁটি মুসলিম এবং ইসলামি সভ্যতার দাবিদার হতে গেলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত উর্দু বা বাংলা নয়-সরাসরি আরবি। বলা বাহুল্য, শহীদুল্লাহ সাহেবের এই দাবি নিয়ে পাক-সরকার, এমন কি জনমনেও কিঞ্চিৎ বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কারণ তারা বাংলা ও উর্দুর মাঝখানে এই ধরনের একটি দাবির জন্য প্রস্তুতও ছিল না। আর ভাষাতত্ত্ববিদ শহীদুল্লাহ এমন একটি উদ্ভট (?) দাবি পেশ করলেন এমন কথা তারা ভাবতেও পারছিল না। কিন্তু একটু গভীরভাবে লক্ষ করলেই বোঝা যায়, ডক্টর শহীদুল্লাহর এই বিশেষ দাবিটি ছিল দ্ব্যর্থবোধক এবং ভালো করে দেখতে গেলে এটি বাংলাভাষার দাবিকেই জোরদার করেছিল। এখানে দাবিগুলো একটু বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা যাক।
প্রথমত ডক্টর শহীদুল্লাহ সাহেব পাকিস্তানকে ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চেয়েছেন, যা পাকিস্তানের জনগণেরও দাবি ছিল এবং ইসলামি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হতে পারে না। কেননা, উর্দু ইসলামি ভাষা নয়। ইসলামি ভাষা বলতে গেলে একমাত্র আরবি ছাড়া অন্য কোনো ভাষা হতে পারে না। আরবি শুধু আরব দেশের নয়-বিশ্ব মুসলিম জাতির ভাষা। এদিক দিয়ে বাংলা, সিন্ধি, বেলুচির দাবিও টেকে না।
আরও কৌতূহলের ব্যাপার, তিনি তাঁর প্রস্তাবে গণতান্ত্রিক দাবিতে বাংলার স্থান সর্ব শীর্ষে এবং উর্দুর স্থান সর্ব নিম্নে দান করে শেষে মন্তব্য করেছেন, ধর্মীয় দাবিতে ধর্মীয় ভাষা হিসেবে আরবির দাবি সর্বপ্রথম এবং মাতৃভাষা ও গণতান্ত্রিক দাবি হিসেবে বাংলা ভাষার দাবি সর্বশ্রেষ্ঠ আর বাংলা অনৈসলামিক ভাষাও নয়। তিনি এ কথা নিশ্চয়ই জানতেন, রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আরবির দাবি যতই শক্তিশালী হোক, পাকিস্তানে তা প্রতিষ্ঠার দাবি অগ্রাহ্য হবে এবং তার পরে যে দাবিটি থাকবে সে হলো বাংলা। তাই বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। এই প্রসঙ্গে মনে রাখা প্রয়োজন, শহীদুল্লাহ সাহেব শুধু তাঁর মাতৃভাষা নয়, সকল জাতির, সকল মাতৃভক্ত সন্তানের জন্য মাতৃদুগ্ধের মতো মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধেয় মনে করতেন। তিনি একথা বারবারই উচ্চারণ করতেন-‘মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার ঋণ কখনও শোধ করা যায় না।’ তাই, পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাভাষার দাবি স্বীকৃত হলে তিনি এই বলে আশ্বাস লাভ করেছিলেন যে, রক্ত দিয়ে হলেও মাতৃভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সময়ে তিনি পাকিস্তানের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা সিন্ধি ও বালুচের কথাও উল্লেখ করে বলেছিলেন, ভবিষ্যতে তাঁদের পক্ষে দাবি উঠলে তাও বিবেচনার যোগ্য মনে করতে হবে।
[গুরুত্ব বিবেচনা করে অগ্রপথিক(শহীদ দিবস সংখ্যা ১৩৯৩, ২ বর্ষ ৬ সংখ্যা।। ৬ ফাল্গুন ১৩৯৩, ১৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৭ ।। ১৯ জমাদিউস সানি ১৪০৭) এর সৌজন্যে লেখাটি পুনরায় প্রকাশ করা হলো।–সম্পাদক] অগ্রপথিক
শহীদুল্লাহ সাহেবের আরবীর ব্যাপারে যুক্তিগুলো ভালো লাগছে 😶