[সালমান সাদিক। তরুণ গল্পকার। চিলেকোঠা পাবলিকেশনের ‘নক্ষত্রের খোঁজে’ পাণ্ডুলিপি প্রতিযোগিতা ২০২২-এর অন্যতম বিজয়ী। প্রথম বই ‘স্বপ্নভঙ্গ সমগ্রে’র জন্য বোদ্ধা পাঠক ও সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন। তারা মনে করেন, সালমান সাদিকের গল্প, গল্পের ভাষা ও ন্যারেটিভ গল্পের চিরাচরিত বয়ানভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করে। সালমান সাদিকের গল্পের স্বর নতুন। বর্তমান প্রজন্মের পাঠকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।
এই গল্পকার সম্প্রতি তার গল্পের পাণ্ডুলিপি ‘একুরিয়ামে’র জন্য ‘ঐতিহ্য শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’–এ ভূষিত হলেন। সালমান সাদিকের গল্প, গল্পের পেছনের গল্প এবং পুরস্কারে ভূষিত যাপন—ইত্যাদি বিষয়ে যোগাযোগের সম্পাদক একটি অনলাইন আড্ডায় তার মুখোমুখি হয়েছিলেন। উভয়ের আড্ডা যোগাযোগের পাঠকদের জন্য হাজির করা হলো। আড্ডার স্বাদ ও মেজাজ অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়াসে ভাষা ও সম্বোধন প্রায় অপরিবর্তনীয়ই থাকছে।—সম্পাদক]
আহমাদ সাব্বির : অভিনন্দন সালমান। ‘ঐতিহ্য শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ পাইলেন। দারুণ।
সালমান : থ্যাঙ্কিউ, ভাই।
আহমাদ সাব্বির : কিন্তু ঘটনা কী? আপনি তো দেখি কোথাও পাণ্ডুলিপি দিলেই পুরস্কার পাইয়া যান! হা হা।
সালমান : না, ফার্স্টে এই পাণ্ডুলিপিই বৈভব রিজেক্ট করছে। এটা কই নাই।
আহমাদ সাব্বির : ও। আপনি কি রেগুলার গল্প লেখেন?
সালমান : না না, আমার গল্প লিখতে যখন ভালো লাগে মূলত তখনই লিখি। এই বইয়ে যে সতেরোটা গল্প আছে এগুলি লিখতে দুই বছর লাগল। তিনটা আবার আরো আগের ২১/২২-এ লেখা। এরকম আরকি। আর আমার সবচে বেশি সমস্যা, একটা গল্প লিখতে লিখতে ভাল্লাগে না। ওইটা রেখে দেই। আর শেষ করি না। এভাবে প্রায় বিশ-পঁচিশটার মতো ফেলে রাখছি। পরে আর আগামাথা বুঝি না। লেখা হয় না।
আহমাদ সাব্বির : সালমান, গল্পের ভাবনাটা আপনার ভেতরে কাজ করে কীভাবে?
সালমান : এইটা হুট করেই আসে, ভাই। কোনো ঠিকঠিকানা নাই। জোর কইরা আনার চেষ্টা করছি। আসে না। কোনো আড্ডা থেইকা আসে বা কাউরে নিয়া চিন্তা করতে করতে একটা কিছু আসে। এমন আরকি।
আহমাদ সাব্বির : প্রথম ক্যান ভাবলেন যে, গল্প লিখি! সবাই তো ভাবে না গল্প লেখার কথা।
সালমান : এইটা মুরাকামির ‘মেন উইদাউট উইমেন’ পড়ার টাইমে মাথায় আসতে পারে। কারণ, ওই গল্পে সিম্পল সব বিষয় নিয়া লিখছে। করোনার টাইম, বেকার বয়া পড়তেছি; তো মনে হইল যে, এই সিম্পল বিষয়গুলা যদি এমনে লেখা যায় তাইলে আমার ট্রাই করা উচিত। এছাড়া রোজনামচা লিখতাম নিয়মিত; ওইখানেও খানিকটা স্টোরি টাইপ কইরাই লিখতাম। ওইখান থেকেও আসতে পারে বিষয়টা। আবার এও হইতে পারে যে, একদিন বাসে কইরা মিরপুর থেকে রাতে আসতেছি, গান শুনতেছি বাসে, ভিড়। জোকার সিনেমার দৃশ্যগুলি মাথায় ঘুরতেছে কেন জানি। আর মনে হইল এই মানুষগুলির ভিতর স্টোরি আছে। এখান থেকেই ফার্স্ট গল্প লিখছিলাম। ওইটা হারায় গেছে অবশ্য। এখনও আইডিয়াটা সুপ্ত আছে। এই তিনটার কোনো একটা থেইকা বের হইছে হয়তো গল্প লেখার ব্যাপারটা।
আহমাদ সাব্বির : এই প্রশ্নটা ক্যান করলাম, আমি-আপনি দুজনই তো একই প্রতিষ্ঠানের। আমাদের বাইতুস সালামে বাংলা ভাষা-সাহিত্য চর্চার একটা অবাধ প্রবাহ ছিল। কিন্তু সেইটা বানান, ভাষারে আরও বেশি নান্দনিক ও প্রমিত করা এবং ধর্মীয় ডিসকাশনগুলা আরও সাবলীল ও মোলায়েম করার পদ্ধতির মধ্যেই একপ্রকার সীমাবদ্ধ ছিল। অনেক বাংলা চর্চা হইত, অনেক সাহিত্য হইত, কিন্তু বৃত্তের বাইরে গিয়া গদ্যচর্চা করা তো দূর কি বাত, গল্প-উপন্যাস লেখার সবক কি উৎসাহও সেখানে ছিল না বোধহয়, আমার যতদূর মনে পড়ে। সেইখানে আপনি গল্প তো লিখতেছেনই, সেও আবার গদ্যের প্রচলিত রূপ ডিঙ্গাইয়া। এই সাহসটা কোত্থেকে হইল!
সালমান : এইটা ঠিক জানি না। বাইতুস সালামে পড়াশোনা করা হইছে, সাহিত্য ইত্যাদি নিয়ে বহুত আলাপ হইছে সত্য, কিন্তু মূল গল্প লেখার আইডিয়া ওইখান থেকে আসে নাই। যদিও বাইতুস সালাম নিয়ে আমি দুই-তিনটা গল্প লেখছি দাওরার সময়, রূপক। এইটার মূল কারণ হইতে পারে, ছোটকালে তিন গোয়েন্দা আর সেবা প্রকাশনীর অত্যধিক বই পড়া আর পরে গিয়া বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদ এগুলি বেশি পড়া। কিছু কিছু গল্প বা বই আমারে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা দিছে। তবে আমি লেখতে পারব আর এইটা কেমন হইতে পারে এটার ফার্স্ট ধারণা পাইছি মুরাকামির বই পড়তে গিয়ে। পরে অবশ্য এর ব্যাপারে আমার আগ্রহ নষ্ট হয়ে গেছে। গড়পড়তা লাগে এখন। কিন্তু প্রাথমিক ধারণাটা হের বই পড়তে গিয়েই আসছে। আর এরপর কয়েকজন সাথিসঙ্গী পাই সবাই বিএসএমেরই : আরিফ এনাম নাইম ভাই আর আমাদের জামাতের নাঈম ভাই। এদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে আর আলাপ-আলোচনা করতে করতে এগুলা বিল্ডআপ করছে ধীরে ধীরে।
আহমাদ সাব্বির : না, এইটা তো গল্প লেখতে আসার জার্নির ব্যাপার বলতেছেন। আমি অন্য ব্যাপারে কৌতূহল দেখাচ্ছিলাম। বলতেছিলাম যে, আপনি পাইছেন কি না জানি না—আমাদের তো রেগুলার শুদ্ধ মানে প্রমিত ভাষার সকল ব্যাকরণ ও ভঙ্গি রপ্ত কইরা কথা বলতে হইত। অশুদ্ধ উচ্চারণেই উস্তাদ কি আতেল সাথি ভাইদের তিরস্কার ও ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হইত। আপনি এই যে গদ্যে গল্প লেখেন তা ছাত্রজমানা থেকেই? না পরে ধরছেন এইটা?
সালমান : না। এইটা জালালাইন থেকে লেখতেছি মোটামুটি। আমি তো বাসায় থাকতাম। আর তাছাড়া এরকম কোনো মজলিসের সাথে যুক্ত ছিলাম না। আমি যে গল্পটল্প লেখি এইটা আসলে বই বের হওয়ার আগে মাদ্রাসার ভিতর দুই-একজন জানত খালি।
আর ওরকম ব্যাপারগুলা বিদ্রোহের পরে আর হয় নাই যতদূর জানি। ওই টাইম থেকে কেবল শুরু করছি। তখন উস্তাদরাও খুব একটা ভাষা নিয়ে মাথা ঘামাইতেন না। বিশেষ করে আমি যখন লেখা শুরু করছি।
আহমাদ সাব্বির : গল্প লেখতেন! আর দশটা সাহিত্য করনেওয়ালা কওমি তরুণের মতোই লেখতেন। প্রমিতরে ছাড়লেন ক্যান? সচেতন কোনো ভাষা-ভাবনা থেকে? না এমনিই!
সালমান : মানে, এইটার কারণ হইল আমি সবকিছু নিয়া পরীক্ষামূলক কাজ করতেছি আরকি। প্রমিততে লেখি না—এমন না। এখনো লিখি। আবার অপ্রমিততে লেখে দেখতেছি কেমন হয়। এরকম আরকি। কোনোটা আলাপি বা আড্ডামূলক গল্প—এইটায় অপ্রমিত ইউজ করলাম, ক্ষোভ বা রাগ প্রকাশক গল্পগুলিতে ইউজ করলাম, দেখলাম অপ্রমিতে এগুলি ভালো ফোটে। আমার ভালো লাগতেছে। এই আরকি। আবার যখন কাহিনি বা বর্ণনামূলক লেখি তখন প্রমিতে মানায় ভালো। তখন প্রমিত ব্যবহার করি।
আহমাদ সাব্বির : আচ্ছা, মানে গদ্য নিয়া এখনও সচেতন কিংবা বিপ্লবী কোনো ভাবনা নাই। গল্পের প্রয়োজনেই গদ্য চ্যুজ করেন!
সালমান : আমি কোনো মতাদর্শ মানি না ভাই। বেকারণ মানতেছি না আপাতত। যখন যেটা মন চাইতেছে সেটা ব্যবহার করে দেখতেছি। যেহেতু এখনো এইটা চেইঞ্জ হয় নাই আমার মনে হয় না আগামীতে নির্দিষ্ট কোনো ভাবনা এই ক্ষেত্রে নিব।
আহমাদ সাব্বির : ওকে। আপনার ভাবনাটা জানলাম। এইবার কন, প্রথম গল্পটা লিখে উঠলেন যখন, আপনি বুঝলেন কীভাবে যে এইটা গল্প হইছে একটা! মানে প্রাণিত হইলেন কীভাবে যে, আমি গল্পই লিখলাম একখান। অন্য কোনো রচনা এইটা না। স্রেফ গল্পই!
সালমান : ওই যে নিয়ত করছি গল্প লেখব। তাই যা লেখলাম সেটা গল্প হইছে। কিন্তু আম্মু কন বন্ধুবান্ধব কন অনেকেই কয় এটা কোনোভাবেই গল্প হয় নাই। এটা একটা দুঃখজনক ব্যাপার ছিল। আম্মু রবীন্দ্রনাথের গল্পের সংজ্ঞা দিয়া গল্প হিসাব করে। সেই হিসাবে এ যাবৎকালে আমার অনেক গল্পই আম্মুর মতে গল্প হয় নাই; প্রবন্ধ হইছে। কখনো কয় প্রবন্ধও হয় নাই।
আহমাদ সাব্বির : আপনার আম্মু কি ভালো পাঠক?
সালমান : হা, আম্মু-বোনেরা সবাই ভালো পাঠক। আম্মু কোমলভাবে দেখলেও বোনরে গল্প পড়তে দিলে আমার বারোটা বাইজা যায়। অনেক কঠিন সমালোচনা করে। পরে মন খারাপ লাগে। অবশ্য এমনিতে তেমন গল্প সে পড়ে না আমার।
আহমাদ সাব্বির : আপনি একবার এক আলাপে বলছিলেন, আপনার গল্প জেনজিদের ভালো লাগবে। আপনার আম্মু তো জেনজি না। কিছুটা ট্রাডিশনাল গল্পই তার ভালো লাগার কথা। তার বাইরের গল্প ভালো না লাগারই কথা। যেমনটা আপনি লেখেন। কিন্তু আপনার বোনেরা তো এই সময়ের। তাদের কেন ভালো লাগে না? বা তাদের সমালোচনাটা ঠিক কোথায়?
সালমান : বিভিন্ন খুঁটিনাটি সমালোচনা আরকি। ভাষা নিয়া, গল্পে গালি থাকলে, এটা নিয়া চরিত্র নাই কেন, এখানে ‘চলে’-এর জায়গায় ‘উঠে’ দিলাম কেন, বাক্য এমন তারছিঁড়া কেন, এরকম বিভিন্ন বিষয়। এমনিতে ওইটা মজা করে কইছি। কিছু গল্প আম্মুরও ভালো লাগছে; এটা সত্য।
আহমাদ সাব্বির : আপনার কিছু গল্পে তো ‘স্ল্যাং’ থাকে। আমি ভাবছিলাম আপনার বাসার লোকেরা আপনার গল্প পড়ে না। এখন দেখি উলটা। তারা এই স্ল্যাংয়ের ব্যবহার দেখে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না?
সালমান : হা, ওই যে এগুলার সমালোচনা করে। তবে আন্দোলনের টাইমে বোনের মনে হইছে গল্পে গালি থাকা জায়েজ। এজন্য কইছিল যে, গল্পে গালি রাখা যায়। এটা ভালো।
আহমাদ সাব্বির : বাহ। চিন্তার বিবর্তন।
সালমান : হা, ওরকমই আরকি। মূলত ওই টাইমে ফখরুলের জামাইয়ের যে ভিডিয়ো ভাইরাল হইল, ওই কারণেই এটা মনে হইছে। আসলে তখন তো উন্মুক্ত গালির চর্চা হইছে।
আহমাদ সাব্বির : হুম। এই অভ্যুত্থানে ভাষা একটা ফ্যাক্টর। আমাদের ক্রোধের প্রকাশে নয়া ভাষার প্রয়োগ দেখা গেছে। স্ল্যাং ছাড়াও র্যাপ গানগুলা দেখেন, ম্লোগান দেখেন, যেগুলা আমরা সচরাচর ভদ্র সমাজে বলি না—আন্দোলনে সেগুলাই আমাদের চাঙ্গা করছে। ফলে ভাষা বিষয়ে নয়া বন্দোবস্তের কথা আমাদের ভাবতেই হইতেছে।
সালমান : হা, এগুলিই আগে থেকে চর্চা করতেছি আরকি। যে গল্পগুলি স্যাটায়ার ও রাজনৈতিক ওগুলিতেই গালির ব্যবহারটা বেশি থাকে নরমালি। আর ধরেন, ভদ্র সমাজের এই ধারণা থেকেই বাহির হওয়ার চেষ্টা আছিল। এখন মনে করেন আন্দোলনের পর এটা লিগাল হইতেছে আরকি।
আহমাদ সাব্বির : হুম, বুঝছি।
এমনিতে আপনার কি মনে হয়, জেনজির ভাষা কি সমাজে স্টাবলিশ হয়ে যাবে? নাকি জেনজিই তাদের ভাষারে শুধরায়ে নিবে? ধরেন, স্কুলে-কলেজে থাকতে আমরা যেমনে আলাপ করি, কথা কই, ভালো একটা করপোরেট জবে ঢুকলেই তো আমাদের জবান বদলায়ে যায়। আমরা ভদ্র ও সুশীল হয়ে উঠি।
সালমান : এইটা খালি জেনজিগো প্রবলেম না। মূলত এইখানে নিজেগোরে সুশীল ও পরিশীলিত করার চেষ্টা বহুত পোলাপানের আছে। নাইলে তো দেয়ালে দেয়ালে গালিই লেখা থাকত। গালিগুলি তো মুছে গেছে। আর করপোরেটের ব্যাপারগুলি কখনো চেইঞ্জ হবে না ওইভাবে; যা মনে হয়।
আহমাদ সাব্বির : ধরেন, গালি যারা লেখল তারা কি ওই গোষ্ঠীর না যারা করপোরেটে যাবে একসময়? নাকি আপনি কইতে চাইতেছেন যে, দেয়ালের গালি যারা মুছতেছে তারাই মূলত কর্পোরেট দুনিয়াতে যাওয়ার মতো মানুষ। গালি যারা লেখছে তারা সেই শ্রেণির না। সহজ কইরা বললে, গালি লিখছে যে জেনজিরা তারা মূলত ‘অভদ্র’ শ্রেণির। এমন? তাইলে ভাষার এই সিলসিলা সমাজে প্রতিষ্ঠা হবে ক্যামনে?
সালমান : এটা প্রতিষ্ঠা পাবে বলতে এটা প্রতিষ্ঠিতই। এলাকার চায়ের দুকান, গলির আড্ডা, রিকশাওয়ালা থেইকা সবাই এগুলির চর্চা করে আসতেছে। কথা হইল সেইম এই ভাষায় সাহিত্যশিল্প করার খাহেশ কম লোকেরই আছে। সবাই লেখতে গেলে কেমনে জানি ভদ্রসভ্য হইয়া ওঠে। পকিত গল্পকার সাহিত্যিক আর্ট ইত্যাদি। যদি সমাজ নিয়া কাজ করতে চায় তাইলে গণমানুষের ভাষায় তারে কাজ করাই লাগবে। নাইলে সাহিত্য-আর্ট একটা পবিত্র বস্তু হয়া থাকবে যা গণমানুষের লগে কানেক্টেড থাকবে না। এই কারণেই যত না মানুষরে নিয়া কাজ হয় তার চেয়ে ফ্যান্টাসি পেম ভালুবাসা নিয়াই লেখকগো কল্পনা বেশি হয়া থাকে। টিপিক্যাল জায়গা থেকে বাহির হইতে পারে না।
আর করপোরেট তো সমাজরে পূর্ণরূপে চিত্রিত করে না। আপনে যখন রিকশাওয়ালার লগে তর্ক করেন তখন আপনার গায়ে করপোরেট লেবাস থাকে না; আপনে তখন রিকশাওয়ালারে ওই গালিগুলিই দেন। তাইলে আপনে কি আলাদা শ্রেণির লোক হইলেন?
আর ভাই, এইটা ভদ্রতা-অভদ্রতার বিষয় না। এইটা মানুষের ভাষা। তাদের এইটা ব্যবহার করতেই হয়। করপোরেট আর সমাজ এক না। একজন শিক্ষক ক্লাশে তার ছাত্রগো বাইঞ্চুত বলতে পারবে না। স্বাভাবিক। কিন্তু একই শিক্ষক তার বন্ধুগো লগে আড্ডায় গালি দিবে। এইটা স্বাভাবিক। চাকরির জগতরে আলাদা শ্রেণি কইরা এরকম বিভাজন সম্ভব না। মূলত মানুষের বিভিন্ন চরিত্র। তারা একেক জায়গায় একেকভাবে অ্যাক্ট করে। যার ফলে তাদের ভাষার চালচলন সেই মতে হয়া থাকে। আপনে যখন কন শালার অফিসে বস আজকে পুটকি মাইরা দিলো তখন আপনে করপোরেট না। আবার করপোরেটে যায়াও আপনে এগুলি বলেন না। মানুষ মূলত বিভিন্ন আচরণ করে। তাকে এককভাবে ব্যাখ্যা করার প্রক্রিয়াটি ভুল।
আহমাদ সাব্বির : আচ্ছা। আলাপ অন্য দিকে যাইতেছে গা। লাইনে আসি। অতীতে আপনার কথাবার্তায় মুরাকামির অনেক রেফারেন্স পাইছি। তার লেখাজোখাও অনেক পড়ছেন ধারণা। মুরাকামির ফ্যান নাকি আপনি?
সালমান : নাহ, ফ্যান না। ফার্স্টে ইংলিশ বই পড়ার সময় তার অনুবাদ পড়তাম। ভালো লাগত অনুবাদ। সহজ। এমনিতে লেখে ভালো। ইজরায়েল গিয়া পুরস্কার নিছে। এইটা নিয়া একটা সাক্ষাৎকারে তার আলাপ আছে। ওগুলি দেখার পর তার উপর ভক্তি চলে গেছে। একজন মানুষ শুধু ভালো লেখলেই তার ফ্যান হওয়া যায় না। ফ্যান হইলে তো তার অনেককিছু আমি ফলো করব। ফার্স্টের দিকে হয়তো ফ্যান ছিলাম। এখন তার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। তার লেখা আসলে এআই টাইপ একটা নির্দিষ্ট চাবি দিয়া ঘুরায় আরকি। এর বাইরে কিছু না। নিজেরে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করার কৌশল, ভেরাইটি ইত্যাদি তার কাছে নাই। হের চাইতে আমার এখন বেশি পছন্দ কাযুয়ো ইশিগুরু। তার লেখা ভিন্ন মাত্রার লাগে।
আহমাদ সাব্বির : মুরাকামি আর হুমায়ূন তর্কে আপনি একবার কইছিলেন হুমায়ূনের চাইনে ফার বেটার মুরাকামি। এখনও কি তাই বলবেন?
সালমান : এটা তো অবশ্যই, হুমায়ূনের চাইতে বেটার অবশ্যই, কিন্তু তার মানে তার ফ্যান হওয়া যাবে এমন লেখা তার নাই। কিছু ভালো লেখা আছে যার জন্য তার প্রশংসা করা যায়।
আহমাদ সাব্বির : ইশিগুরুর কথা কইলেন। তার লেখাটেখা পড়ি নাই এখনও? কেমন?
সালমান : নেভার লেট মি গো পড়তে পারেন। জোস। এটা নিয়া সিনেমাও আছে; খুবই ইউনিক কনসেপ্ট।
আহমাদ সাব্বির : ওকে। পড়বনে তাইলে।
সালমান : আরো আছে, আমি এটাই পড়ছি খালি, বাকিগুলি পাই নাই এখনো।
আহমাদ সাব্বির : গল্প তো লেখতেছেন অনেকদিন ধইরাই। গল্পর পরিমাণও কম না। গল্প নিয়া আপনার ভাবনাটা আসলে কী?
সালমান : নির্দিষ্ট কোনো ভাবনা নাই। মুরাকামি কয়, চরিত্রগুলি নিজেরাই টাইনা নিয়া যায়। ব্যাপারটা খানিক এমন। গল্প আমারে যেদিকে টানে ওদিকেই যাই। নির্দিষ্ট কোনো আইডিয়া এখনো বুঝি নাই। ব্যাপারটা এইভাবে দেখি যে, এই যে লেখতেছি এইটা হইল আমি আসলে কী চাই বা আমার নিজেরে চেনার প্রচেষ্টা। একজন পাঠক যদি এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমার গল্প পড়ে তাইলে ব্যাপারগুলি ধরতে পারবে যে, আসলে গল্পগুলা একজন মানুষের বিভিন্ন অবস্থাকে তুইলা ধরে। এই ব্যাপারটা নিয়াই লেখছিলাম, যেভাবে জানতে পারি আমি কী নই। এই গল্পে মূলত এইটাই ফোকাস ছিল, একজন মানুষ নিজেরে চেনার চেষ্টা করতেছে। এটাই ধারণা বলা যায় আপাতত।
আহমাদ সাব্বির : চেনাজানার বাইরে অন্য পাঠকের থেকে গল্প নিয়া রেসপন্স পান কেমন?
সালমান : খুব কম। কারণ চেনাজানা আমার সীমিত। এর বাইরে এখনো ওইভাবে আমার কারো সাথে গল্প নিয়ে আলাপ হয় নাই। হুট করে আমার মনে হয় এখনো আমি ওই পর্যায়ে যাইতে পারিনি। যেখানে গেলে আমারে ব্যক্তিগতভাবে না চিনাই পাঠক আমার বই কিনবে। তবে এর ভিতর কয়েকজনের থেকে কিছু রেসপন্স অবশ্য পাইছি যেগুলি ভালো। যেমন সাব্বির জাদিদ ভাইয়ের সাথে ফার্স্ট দেখা হইলে ভাই কয়, যোগাযোগে আপনার লেখা পড়ছি মনে হয়। তারপর এক আপুও এরকম চিলেকোঠার অনুষ্ঠানে আমাকে বলল আপনি সালমান সাদিক! আমি ভাবছি আপনি আরো বয়স্ক হবেন। আপনার লেখার হিসাবে আপনার বয়স কম লাগে। আপনি দারুণ লেখেন। এ ছাড়াও আখতার ভাই বা মিলু ভাই উনারাও কিছু কিছু বলছে। এর বাইরে আমভাবে সাধারণ কোনো পাঠকের সাথে আমার যোগাযোগ হয় নাই বা কারো রিভিউ পাই নাই। মাঝে অপরিচিত কয়েকজনকে বইটা পাঠাই। তারা পরে আর রেসপন্স করে নাই বিধায় জানতে পারি নাই।
আহমাদ সাব্বির : গল্পে আপনি কি কোথাও পৌঁছাইতে চান? মানে, গল্পকার হিসাবে নিজেকে কোথাও দেখতে চান কি না।
সালমান : না, এখনো তো নিজের কেপাবিলিটি নিয়াই কোনো ধারণা করে উঠতে পারি নাই। কেমনে বুঝব আমি কই যাব বা যাইতে চাই? মাঝে এমন একটা প্রশ্ন জাগে যে আমি যে লেখতেসি এর দ্বারা ফায়দা কী? আমার কী ফায়দা বা মানুষের কী ফায়দা হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়া দীর্ঘদিন আর লেখি নাই। এখনো উত্তর পাই নাই। এই হইল আমার অবস্থা।
আহমাদ সাব্বির : এই আত্মজিজ্ঞাসাটার মুখামুখি সব লেখককেই একসময় হইতে হয় সম্ভবত।
সালমান : হইতে পারে। এইটার উত্তর না জানা পর্যন্ত নিজেরে আসলে জানা যায় না বা নিজের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না। এইটা নিয়া মাথা না ঘামাইলে আসলে পথ পাড়ি দেওয়া যায় না; এক জায়গায় ঘুরতে হয়।
আহমাদ সাব্বির : ঐতিহ্যে তরুণ পাণ্ডুলিপি প্রতিযোগিতায় একুরিয়াম নির্বাচিত হইছে সংবাদটা জেনে অনুভূতি কেমন ছিল? কেমন লাগছিল ব্যাপারটা?
সালমান : আমি তখন অফিসে আছিলাম। ব্যাপারটা ফোনে জানাইছে। তো আনন্দ প্রকাশ যথাযথ হয় নাই। তবে এটা অনেক আনন্দ দিছে যে এইভাবে কইরা প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই আমার দুইটা বই আসতেছে। যার মাধ্যমে এইটা প্রমাণ হচ্ছে যে আমার লেখার গ্রহণযোগ্যতা আছে। খুশিতে লাফাইতে মন চায় আরকি।
আহমাদ সাব্বির : আপনার দুইটা পাণ্ডুলিপিই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হইল, বিরাট অর্জন।
সালমান : এইটা অনেক আনন্দের ব্যাপার। তা ছাড়া আমার জন্য সংবাদটা অপ্রত্যাশিতই ছিল। আমি আশা ছেড়ে দিছিলাম বৈভবে রিজেক্ট খায়া।
আহমাদ সাব্বির : এইটা হয়। সবার রুচি, পছন্দ-অপছন্দ তো একরকম না।
সালমান : আর এইটা তো বড় প্রতিযোগিতাই ছিল। ‘চিলেকোঠা’রটাও ছিল কঠিন; উনারা খুব বিশ্লেষণ কইরা বিচার কইরা পাণ্ডুলিপি নির্বাচন করে আরকি।
আহমাদ সাব্বির : এমনে কী মনে হয়, আপনার দুইটা পাণ্ডুলিপিই কি বিজয়ী হবার মতোই! কখনও কি সন্দেহ হয় যে, না, এইখানে অন্য কোনো ঘটনা থাকতে পারে!
সালমান : এমন তো ধারণা হয় নাই। আপনে বলায় মনে হইতেছে আপনি এখানে কিছু করলেন কি না! এখন তো মনের ভিতর সন্দেহ ঢুকে গেল ভাই!
আহমাদ সাব্বির : হা হা। না না। ‘চিলেকোঠা’তে তো আমি ছিলাম না। আমি ‘ঐতিহ্য’রও কিছু না। আপনার আত্মবিশ্বাসটা দেখতে চাইতেছিলাম। যেমন ধরেন, কোনো পত্রিকাতেও আমার গল্প ছাপা হইলে আমার সন্দেহ হয়। গল্পটা কি তারা পড়ছিলেন? পড়লে তো এই গল্প ছাপার কথা না। গল্প কি কম জমা হইছিল? পৃষ্ঠা ভরতেই কি আমার লেখা ছাপল? এই আরকি!
সালমান : ‘চিলেকোঠা’রটা দেওয়ার পর আত্মবিশ্বাস কম ছিল। তবে এইটা মনে হইত যে ফেয়ার ইলেকশন হইলে আমারে সিলেক্ট করতেই হবে। এরকম মান আমার লেখায় আছে। আমার এই আত্মবিশ্বাস রিসেন্ট বাড়ছে ‘ঐতিহ্য’ সিলেক্ট করার পর।
আর ভাই, আত্মবিশ্বাস তো লেখকের থাকতেই হবে। আত্মবিশ্বাস থাকাটাও ডেঞ্জারাস ব্যাপার ভাই। এতে কইরা নিজেরে আরো উন্নত করার স্পৃহা কইমা যাইতে পারে। ভীতিকর লাগে আমার কাছে এটা।
তবে আশা রাখি আত্মবিশ্বাস আইলেও এটা আমি হারাব না। কারণ প্রতিটা গল্পেই আমি চেইঞ্জ আনার চেষ্টায় থাকি। আগেরটার চাইতে অন্যরকম এক ধাঁচে লেখার ইচ্ছা থাকে ।
আহমাদ সাব্বির : হুম। ওকে। কখনও উপন্যাস লেখতে মন চায় না?
সালমান : উপন্যাস কেউ কেউ আমারে লিখতে কইছে। আরিফ বলে উপন্যাসের কথা। আমার তেমন ইচ্ছা নাই। আমার আসলে অল্প কথার ভিতর দিয়া চিন্তাটা কীভাবে ফুটায়ে তোলা যায় এটাতেই বেশি ফোকাস। উপন্যাসের যে ব্যপ্তি অতটা দীর্ঘ করে লেখার ইচ্ছা হয় নাই। আপাতত আরকি। উপন্যাস নিয়া একটা ইচ্ছা আছে। এন্থোলজি টাইপ উপন্যাস। মানে সবগুলাই আলাদা আলাদা গল্প। গল্পগুলা একজনেরই বিভিন্ন অবস্থা ও চিন্তা ফুটায়ে তুলবে। একসাথে জোড়া দিয়ে দিব। খালি প্রত্যেকটার আলাদা শিরোনাম সময়কাল থেকে চিন্তা সব আলাদা থাকবে। পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজটা করে দেখার একটা ইচ্ছা আছে। তবে গল্পের বাইরে গিয়া নিয়মিত উপন্যাস লেখার চেষ্টায় আগ্রহ নাই।
আহমাদ সাব্বির : কিন্তু যতদূর বুঝি, গল্পের তো পাঠক কম। নাই বললেই চলে। এখনও উপন্যাসের পাঠক ভালো। পাঠক নিয়া কোনো চিন্তা নাই বইলাই কি এই স্বাধীন চিন্তাটা করতে পারতেছেন?
সালমান : হা, এইটা অবশ্যই সঠিক। পাঠক নিয়ে কোনো চিন্তা নাই। পাঠকের মন ও খাহেশ জুগায়ে লেখার ইচ্ছা হয় নাই। এমনকি কেউ যদি গল্প নিয়া পরামর্শ দেয় সাধারণত ওই পরামর্শ আমি মানি না।
আহমাদ সাব্বির : মনে আছে? আপনার গল্প পাবলিশ কইরাও পরে যে রিমুভ করল এক ওয়েবজিন। কোনো জবাবদিহিতা দেয় নাই?
সালমান : আমি আর পরে যোগাযোগ করি নাই।
আহমাদ সাব্বির : আমারে বলছিলেন যে, আপনি মাদরাসাপড়ুয়া সে কারণেই রিমুভ করছে। এই কারণেই যে রিমুভ করছে এইটা বুঝলেন ক্যামনে? তখন জিজ্ঞেস করতে চাইলেও আর মনে ছিল না। এখন কন তো!
সালমান : কারণ ফার্স্টে আমারে ফোন দেয়। দিয়া পরিচয় নেওয়ার আগে কয় যে আপনার গল্পটা প্রকাশ করব। আপনার পরিচয়টা দিন। তো ফোনে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিলে ওরা বলে যে, আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করব। এরপর তো আর যোগাযোগ করে নাই। দেন হুট করে দেখি একদিন আমার লেখা। আপনিই বোধহয় দিছিলেন। পরে আবার ঘণ্টাখানেক বাদে দেখি নাই। ওহ, এর ভিতর কাহিনি হইল ওরা যোগাযোগ করে না প্রায় তিন মাস হয়ে যায়। পরে একই গল্প আমি আমার পরিচয় চেঞ্জ করে চট্টগ্রাম ইসলামিক ইউনিভার্সিটি দিয়া চালাইলাম। তখন তারা প্রকাশ করল। দুইদিনের মাথায়। তারপর হয়তো তারা বুঝে রিমুভ করে।
আহমাদ সাব্বির : আপনার গল্পটা আমি পড়ছিলামও সেখানে। যতদূর মনে পড়ে আমিই আপনারে লিংক সরবরাহ করছিলাম। পরে দেখি আর নাই। ওইটা বোধহয় আপনার প্রথম প্রকাশিত গল্প ছিল?
সালমান : ঠিক খেয়াল নাই। সম্ভবত প্রথমই।
আহমাদ সাব্বির : নাহ, জিনিসটা আসলেই অত্যন্ত হাস্যকর ছিল।
সালমান : ভাবতেছি নেক্সট আরেকটা গল্প এরকম মাদ্রাসার স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়া এইরকম সেইম কাহিনি করব। তাইলে শিউর হওয়া যাবে।
আহমাদ সাব্বির : তারা নাই তো। তবে ওই একই সম্পাদক আরেক নামে আরেকটা ওয়েবজিন করতেছেন। সেইখানে পাঠাইতে পারেন।
সালমান : আহা, ব্যাপারটা তো তাইলে হইল না। এটা তো দুঃখের কথা কইলেন ভাই।
আহমাদ সাব্বির : শোনেন, একটা কথা এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করি।
সালমান : হা ভাই।
আহমাদ সাব্বির : আপনি কি আপনার পরিচয় নিয়া কোনো সংকোচবোধ করেন?
সালমান : নাহ, এই পরিচয়েই আমি সব জায়গায় যাই, শাহবাগী আপু চাকরি বই সব।
আহমাদ সাব্বির : মানে আপনি যে আলেম বা মাদরাসাপড়ুয়া, সাহিত্য করতে গিয়া এইটা লুকাইতে ইচ্ছা হয় কি না কখনও? বা প্রচারও করেন কি না সেইভাবে?
সালমান : প্রচার আলাদা কইরা করি না। মনে করেন কোনো শাহবাগী আপু জিগাইল, কী করো? কই পড়ছ? আমি কই, মাদ্রাসায় দাওরা পাশ। এরকম আরকি। কোথাও এইটা লুকাই না।
আহমাদ সাব্বির : ওকে। বুঝছি।
সালমান : আলাদা কইরা হাইলাইটও করি না আরকি।
আহমাদ সাব্বির : ধন্যবাদ, সালমান। আমার আজাইরা প্যাচালের উত্তর দিয়া সময় নষ্ট করলেন।
সালমান : না ভাই, আসলে খুবই খারাপ সময় যাইতেছে। বিরাট একটা মারা খাইসি রিসেন্ট। ব্যক্তিগত কারণে খুবই স্যাড আছি। আসলে এই টাইমে আপনি আলাপ করলেন, মনটা অন্যদিকে ঘুরল। ভালোও লাগল। এর আগে এত ডিটেইলস কারো সাথে আলাপ হয় নাই।
আহমাদ সাব্বির : সৃজনশীল লোকদের সাথে এইসব আলাপ করতে আমার ভালো লাগে। সুযোগ পাইলেই করি। সেইসূত্রে আপনার সাথে এই আলাপ। আমারও অনেক ভাল্লাগলো। জানলাম অনেক কিছু। অনেক ব্যাপার ক্লিয়ারও হইল।
সালমান : মাথা নষ্ট ভাই! এটার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিকতা করলাম না তাই।
আহমাদ সাব্বির : হা হা হা।
সালমান অসাধারণ। সাধারণদের উচিত দূর থেকে সালমানকে পড়ে মুগ্ধ হয়ে থাকা। কাছে গেলে সহ্য হবে না।
সালমান ভাই! আপনি যেই ভাষায় লেখতেছেন মানে গণ মানুষের ভাষা আপনের কি মনে হয় এই গণ মানুষ মানে এলিটদের বাইরের লোকেরা আপনের লেখা পড়বে? বা পড়লেও ভাষাটা যেইটা ওরা মুখে ইউজ করে আপনের লেখায় সেইটা পড়ে আপনত্ব বোধ করবে? ওদের কাছে ইজি লাগবে?
আহমাদ সাব্বির সাহেব, প্রতি সংখ্যায় অন্তত দুটো সাক্ষাৎকার চাই।
ভাল্লাগছে। লেখকরা কীভাবে ভাবেন, জানতে পারলে ভাল্লাগে।