দুয়ারে পাষাণ তালা (তৃতীয় কিস্তি)

মূল : মুস্তফা করিম

আরমান

দুয়ারে পাষাণ তালা (দ্বিতীয় কিস্তি)

‘ওইটা পুরান আলাপ, নুরা। ওই সময় মসজিদে জিনেরা বসত করতেন। যুবতি মাইয়া উনাদের বড়োই পছন্দ ছিল। দেখস নাই, মসজিদে যাতায়াতের ফলে ফজিলা আর জয়নবের কী দশা হইল? হায় আল্লাহ! এখন তো ওরা একদম অবুঝ শিশুর মতন হইয়া গেছে। হুঁশজ্ঞান তো দূরের কথা, কাপড়চোপড়েরও ঠিক নাই। এইসব আগপিছ ভাইবা তখন যাইতে মানা করছিলাম। কিন্তু এখন ভয় নাই। নতুন ইমাম ওয়াজেদ শাহ আলেম ও বুজুর্গ মানুষ। সে জিনদের ভাগাইয়া দিছে। সবার ওপরেই আল্লাহর দয়া থাকে। কেউ বোঝে, কেউ বোঝে না। যা মসজিদে, কিচ্ছু হবে না।’ একিনের সহিত বলে মজিদ। তার দৃষ্টি হুক্কার কলকির দিকে। গর্দানে ঝুলতেছে কালো সুতায় বান্ধা একটা রুপার খিলাল, যেইটা দিয়া সে কলকির ভিতরকার তামাকের মরা আগুন খোঁচাখুঁচি কইরা জ্বালাইয়া রাখতেছে।

ইমামের প্রসঙ্গ আসায় মজিদের বুকের ভিতর দুঃখ উথলাইয়া ওঠে। তাজা হয় পুরানা ক্ষত, যা তারে ইমামতির পদ থেকে হটানোর ফলে সৃষ্টি হইছিল এবং আজ মালিক জহির কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়া যেইটারে আবারও তাজা করছে। একটা হালকা ‘আহ’ ধ্বনি বাহির হয় মজিদের মুখ থেকে। নুরার জবাবের অপেক্ষা না কইরাই সে বলতে থাকে, ‘বুঝছস নুরা, নতুন ইমাম হইলেন কারি মানুষ, কোরআনের হাফেজ। তার মায়াভরা গলার কেরাতে কী যে মধু। নামাজে যখন দাঁড়ায়, সূরা যেন পড়ে না, গাইয়া শোনায়। তাছাড়া সে তো খালি ইমামতিই করে না, গ্রামের বাচ্চাদের এলেমও শিখায়। তার তুলনায় আমি কী? কোথাকার এক কলকির ছাই, গুনাহগার বদকার ইনসান, এবং বেআক্কেলও বটে। এই হালুয়া-পোলাও-কোরমা দিয়া আমি কী করব? হাবেলি থেকে আমার জন্য সাদা ডাল-রুটি নিয়া আয়। মজাদার খানা ইমামের কাছে যাওয়া উচিত। সে মহৎ। খোদা তার সহায়। যা নুরা, হাবেলি থেকে রফিয়ারে সাথে নিয়া মসজিদে যা। খোদা সব দেখতেছেন। তিনি জরুর ইনসাফ করবেন।’

নুরা নড়ে না। রাগে তার চিরল ভুরু কুঁচকানো; পাতলা ঠোঁটে বিদ্রুপের বক্র হাসি। ওই দিনের কথা তার ভালোই মনে আছে, যেদিন সে গ্রামের মহিলাদের সাথে দল বাইন্ধা মসজিদের ঝরনা হইতে পানি লইতে গেছিল এবং সেজন্য মজিদ তারে ভয়ানক গালাগাল কইরা বহিষ্কার করছিল; আর যখন সে পালটা কিছু বলতে গেছিল, তখন মজিদ তারে কেবল ‘বাজারি মাইয়া’ই বলে নাই, বরং মারতেও ছুইটা আসছিল।

এমন জাত অপমান সেটাও সবার সামনে? ঝরনার পাশে দাঁড়াইয়া কলসিতে পানি ভরার সময় মুসল্লিরা যে আমার দিকে তাকাইয়া থাকে, তাতে আমার কী দোষ? আর ওই ভাঙা কুঠুরির ঘটনাটা? মালিকের বেটা যখন ভিতরে আমার ইজ্জত লুটতেছিল আর এই গ্রাম-সম্পর্কের চাচা মজিদ বাইরে ঠায় দাঁড়াইয়া ছিল, তখন সে কি জানত না ভিতরে আমার সাথে কী ঘটতেছে? আমি সেই ঘরে একা ছিলাম। মালিকের বেটা তার সামনেই কুঠুরির ভিতরে আইসা দরজায় খিল দিলো। এইটা সে দেখে নাই? তারপরও এই ব্যাটা আমারে বাঁচায় নাই। আমি একটা গরিব বেচারা নারী আর কীই বা করতাম? চিল্লাইতাম?—চাচা, আমার ইজ্জত বাঁচা? আর একবার যখন আমার ইজ্জত লুণ্ঠিত হইল আর মালিকের বেটা আমার শরীরের স্বাদ পাইয়া গেল, এরপর সে বারবার আসত আমার দেহের মজা লইতে; তারে কেমনে বাঁধা দিতাম? আর এই বুইড়া মালিক জহির, সে যখন আমারে দিয়া তার পাও দাবাইয়া নেয় এবং মালিশও করাইয়া নেয়, তখন আমি কেমনে তারে মানা করি? আমার ইজ্জত আমি বিলাই নাই। জোর কইরা ছিনাইয়া নেওয়া হইছে। আমি বাজারি মাইয়া না।

অতীতের সকল ঘটনা নুরার ইয়াদ আসে এবং প্রতিটা ইয়াদের সাথে সাথে ঝাঁকি দিয়া ওঠে তার শরীর।

‘না চাচা, আমি মসজিদে যাব না। ইমামরে খানা দিয়া আসা হাবেলির নওকরের দায়িত্ব। সে কোথায়? কাজ ফালাইয়া আতশবাজি ফুটাইতে গেছে? তারে হুকুম দাও, সে খানা লইয়া যাক। আরেকজনের কাজ আমি করব না।’

নুরার কটু বাক্য শুইনা মজিদের চেহারা রাগে গরম হইয়া ওঠে। হুক্কা একপাশে রাইখা সে সোজা হইয়া বসে। তার মনে চায়, নুরার ওপর টুইটা পড়ে। মালিক জহিরের কিষানবর্গ আর চাকর-বাকরদের ধমকধামক দেওয়া এবং ক্ষেত্রবিশেষে পিটানো তার বিশেষ দায়িত্বের অংশ। মালিক জহিরের মরহুম বাপজানের জামানা হইতেই এই দায়িত্ব গুরুত্বের সহিত পালন করার হুকুম দিয়া রাখা হইছে তারে। কিন্তু এই দফায় মজিদ নিজেরে সংযত করে।

‘এই ছোকরি! কী হইছে তোর? আমার হুকুম অমান্য করার সাহস হইল কেমনে? আমি তোরে নেক কামের হুকুম দিতেছি, আর তুই কিনা মানতেছস না আমার কথা?’

ভয়ে নুরা কম্পমান হয়। মজিদরে রাগানোর পরিণতি ভালো হবে না, জানে সে। মালিক জহিরের এই পাষাণ সাম্রাজ্যে কেউ গুম বা কতল হইয়া যাওয়া তেমন বড়ো কোনো বিষয় না। এইটা সত্য যে ঘটনাগুলা মালিক জহিরের চোখের ইশারাতেই এবং তার সম্মতির ছায়াতলেই ঘইটা থাকে। কিন্তু কীভাবে এইসব ঘটে এবং কে এইসব ঘটায়, মানুষ সব জানে; যদিও মজিদের দিকে আঙুল তোলার সাহস কারও হয় না।

নুরার স্বামী মজদুরি করে দূরের এক শহরে এবং নুরার দেহের আশেক মালিক জহিরের বেটা পড়াশোনা করে দূরে কোথাকার এক ফৌজি ইশকুলে। মজিদের সাথে নুরার তেমন কোনো সম্পর্ক নাই বটে, কিন্তু মজিদের উপস্থিতি নুরার জীবনে একজন নেগাহবান মুরব্বির মতন বিরাজ করে অবশ্যই। তার নেগাহবানি ছাড়া হাবেলির শ্বাপদসংকুল পরিবেশে নুরার জীবনযাপন সহজ ছিল না। মালিক জহিরের হাবেলিতে ‘ঝুটা খাবার’রে ‘কুত্তার দান’ বানাইতে দেরি লাগে না। ফলস্বরূপ, সম্মিলিত সম্ভোগের শিকার হওয়া এবং এরপর নিজের ইজ্জতহানির ঘটনারে চাইপা রাখাই হয় হাবেলির অক্ষম মহিলাদের ভাগ্য।

মনের দুঃখ মনে চাপাইয়া মজিদরে গালি দিতে দিতে নুরা ওইখান থেকে গায়েব হয়। দ্বিতীয়বার সে যখন হাবেলি থেকে বাহির হয়, তখন তার সাথে একটা বালকরে লন্ঠন হাতে দেখা যায়; আর তারা যখন মসজিদ পানে হাঁইটা যায়, তখন মজিদের হুক্কার ঘড়ঘড় আওয়াজ এই নিশুতি রাতে অনেকটা পথ পর্যন্ত তাদের পিছা করে।

***

গোসল করার পর ওয়াজেদ কাপড় বদলায়। গরমের রাতে ভিজা ভিজা শরীরে তার বড়ো আরাম লাগে। চেহারায় ছড়াইয়া পড়ে শান্তির আবেশ। মসজিদের সীমানার ভিতরে এক নারী আর বালকরে ঢুকতে দেখা যায়। চমকায়ে ওঠে ওয়াজেদ। রাতের এই সময়ে এদিকটায় কোনো মহিলা আসে না। দিনের বেলা যদিওবা আসে, সেটা ঝরনা হইতে পানি লইতে আসে।

নুরা;—ভয়ে হঠাৎ জায়গায় দাঁড়াইয়া যায়, সামনে আগায় না। তার হাত-পা অবশ হইয়া আসে। নিকষ কালো রাত, ঘোর অন্ধকার চারিদিকে, মসজিদের সীমানার ভিতরে ঘন ডালপালাবিশিষ্ট উঁচু উঁচু বৃক্ষ হইতে পেঁচার অশুভ ঘূৎকার আর ঝরনার নিকট দাঁড়াইয়া থাকা একটা দীর্ঘ ছায়ামানব—ভয় তো তার পাওয়ারই কথা।

‘আমি খাবার নিয়া আসছি।’ শুকনা গলায় বলে নুরা।

‘মাচার ওপর রাইখা দাও,’ কুঠুরি-লাগোয়া মাচার দিকে ইশারা করে ওয়াজেদ। রাশভারী গলা, তবে সুর নরম। নুরার ভয় পড়তির দিকে যায়। অস্বস্তি-জড়ানো পায়ে সে মাচার কাছে আসে। তার পিছে পিছে ওয়াজেদ। নুরা এখনও তটস্থ। তার বুক জোরে জোরে ধড়কায়। পাশেই দাঁড়াইয়া আছেন এমন এক মানব, যিনি এই নিরালা মসজিদে একলা থাকেন; যিনি বড়ো মুবারক ও মুহতারাম ইনসান এবং সম্ভবত খোদার সাথেও যিনি নিয়মিত গুফতগু[1]কথোপকথন কইরা থাকেন। নুরা তার পাপী সত্তার ভার তীব্ররূপে অনুভব করে।

‘তোমার ওপর খোদার রহমত হোক। দেখি, তশতরিখানা আমারে দাও।’ ওয়াজেদ হাত বাড়াইয়া নুরার মাথার ওপর থেকে তশতরি নামাইয়া নেয়। এই নিশুতি রাতে যৌবনভরা এক নারীর উপস্থিতি এক অদ্ভুত পুলক জাগায় তার মনে; যেন শুষ্ক মরুর দেশে রাতের শীতল দমকা বাতাস বইয়া যায় কিংবা তপ্ত পাথরের গায়ে সমস্তভাবে ঝইরা পড়ে বৃষ্টির মিহি দানা। লন্ঠনের হলুদ আলোয় ফরসা হইয়া ওঠা নুরার চেহারা, টানা টানা চোখজোড়া যা ওয়াজেদের দিকে একপলক চাইয়াই শরমে নত হইয়া আসে, দীর্ঘ গ্রীবার নিচে দোপাট্টা আর কামিজের নিচে অনুমিত স্ফীত বক্ষ—এক আশ্চর্য বেপরোয়াভাব মাথাচাড়া দিয়া ওঠে ওয়াজেদের মনে। তার বেয়াড়া নফস চায়, তার সামনে দাঁড়াইয়া থাকা নারীর গাল ছুঁইয়া দিবে এবং করতলে নিবে বক্ষযুগল। কিন্তু কী এক গায়েবি ভয় আর অবচেতনে প্রোথিত এক জমাট শক্তি তারে প্রবলভাবে বাধা দেয়: তুমি এইরকম করতে পারো না। তুমি যেই মর্যাদার অধিকারী, সেখানে দাঁড়াইয়া এইরকম নির্লজ্জ কাজের চিন্তা মনে আনাও পাপ, বদতরিন গুনাহ।

নুরা ভক্তিবশত দুই কদম পিছাইয়া যায়। তার কোলের বাচ্চাটা হঠাৎ তীক্ষ্ণ চিৎকারে কাইন্দা ওঠে। ওয়াজেদের ধবধবে সাদা পোশাক দেইখা ভয় পাইছে সে। চোখ বন্ধ কইরা জাপটাইয়া ধরছে নুরার শরীর। লুপ্ত হইতে চাইতেছে বুকের ভিতরে।

‘বাচ্চা ভয় পাইছে… ওরে নিয়া যাও… ঝুটা বরতন কাল কারও হাতে পৌঁছানো যাবে।’

‘মালকিনের হুকুম, ঝুটা বরতন যেন ছাইড়া না আসি। ঝুটা খাবারের খোঁজে মসজিদে নাপাক জানোয়ার আসতে পারে।’

ওয়াজেদ অজান্তেই খুশি হয়। আরও খানিকটা সময় নুরা থাকবে। আরও কিছুক্ষণ পাওয়া যাবে ওই অচেনা পুলক। মাচার ওপর তশতরি নামাইয়া রাখে সে। ঢাকনা সরাইতেই নাকে আইসা লাগে পোলাও, কোরমা আর ফিরনির সুবাস। নুরার কোলের বাচ্চাটা হাত-পা ছুইড়া কাইন্দা যাইতেছে। রাতের নিস্তব্ধতায় ইথারে ইথারে বাড়ি খাইয়া ফিরতেছে তার ক্রন্দনরব।

‘ওহ হো শাদান.. চুপ কর বেটি। তোরে আবার কে কামড়াইল যে এইভাবে কানতেছস। চুপ কর। নাইলে কিন্তু এইখানেই রাইখা যাব।’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ, কেন না? এইটা আল্লাহ ঘর মসজিদ। এইখানে যে-কেউ থাইকা এবাদত করতে পারে। তুমিও থাকতে পারো।’ ওয়াজেদ নিজের কথায় ভিন্ন ইঙ্গিতের আভাস পায়। দ্রুত হয় তার শ্বাস-প্রশ্বাস।

নুরা বিস্মিত হয়। বাচ্চার কান্নাকাটির দরুন তার চেহারায় যে অস্থির ভাব ছাইয়া গেছিল তা দূরীভূত হয় এবং সেখানে ছড়াইয়া পড়ে স্বস্তির রেশ। মরদ মানুষের এইভাবে কথা বলাটা তার কাছে নতুন। সবাই তার সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলে। তার স্বামীই যা একটু ঢিমেতালে কথা বলে.. সেটাও মাঝে মাঝে.. যখন তার দেহ হইতে স্বাদ লইবার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এবার সে কোট ফাতাহ খান ছাইড়া গেছে এক বছরের ওপরে হইয়া গেল, ফেরার নামগন্ধ নাই।

সামনে বইসা থাকা ইমাম তারে যা বলে এবং যেভাবে বলে, তাতে নুরা একটা আপনত্বের ভাব খুঁইজা পায়; যেন ইমাম তার পূর্বপরিচিত। তার ভয় কাইটা যায়, আত্মবিশ্বাস ফিরা আসে মনে। কৃতজ্ঞতাভরা চোখে সে ওয়াজেদের দিকে তাকায়, যে তার কথা ভুইলা খাবার নিয়া ব্যস্ত।

‘মাফ করবেন, আমি এইখানে থাকতে পারি না।’

ওয়াজেদের হাত মুখের কাছে আইসা থাইমা যায়। হাতেধরা লোকমা পুনরায় বরতনে ফেরত আসে।

‘কেন? তোমার জন্য কি এবাদত জরুরি না?’ ওয়াজেদ গভীর দৃষ্টিতে নুরারে পরখ করে। তারে দেখায় ওই বুজুর্গের মতন, যিনি প্রতিনিয়ত মানুষরে নেক আমলের তালকিন করেন।

নুরা চোখ নামাইয়া নেয়। খানিকটা অপ্রস্তুত বোধ করে। ওয়াজেদরে কী জবাব দেবে সে? কীভাবে তারে বলবে সে বদকার আওরত? নামাজটাও ঠিকমতন পড়তে জানে না? তার কাছে ধর্ম মানে দুই ঈদে ভালো কাপড় পরা, কুরবানির ঈদে গোশত খাওয়া আর রমজান মাসে দিনের বেলা না খাইয়া থাকা।

এটা সত্য যে, রোজার দিনে খালিপেটে গরু-মহিষের গোবর সাফ করা, খেতের কাজ করা, এরপর হাবেলিতে ফিরা আইসা ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ঘরের কাজকারবার করা—তার খিদার জ্বালা দ্বিগুণ বাড়াইয়া দেয়, কিন্তু তারপরেও সেই কষ্টের ভিতরে একটা নিষ্পাপ শান্তি আছে, একটা স্বতন্ত্র পরিচয়ের ছাপ আছে, যা তারে সমাজের আর দশটা মানুষের কাছাকাছি আইনা দেয়। নুরার চোখে এই হইতেছে ধর্ম। খোদারে খুশি করার নগণ্য তরিকা।

কিন্তু খোদা তার ওপর মেহেরবান হন নাই। তার কপালে মনে হয় দুঃখ ছাড়া আর কিছু লেখা নাই। সুখ শান্তি স্বস্তি তৃপ্তি নিশ্চিন্তি—এইসব আবার কী? সে বদকার আওরত, নিজের কিসমত তো আর বদলাইতে পারে না। যতদিন বাঁচার এইভাবেই বাঁচা লাগবে—একিন হইয়া গেছে নুরার। তার অজুদ সেই অন্ধের মতন, যে দিকহীন দিশাহীন এক বিশাল ধু-ধু মরুভূমির মাঝে উদ্‌ভ্রান্ত হইয়া ফিরতেছে, যার দর্শনক্ষমতা নাই বিধায় কোনো গন্তব্যও নাই, আর তাই পথের মাঝে কোনো মরীচিকা থাকারও প্রয়োজনীয়তা নাই; তার অজুদটাই স্বয়ং মরীচিকা।

নুরা চুপ থাকে। নিস্তব্ধতার মাঝে কেবল শাদানের ফোঁপানোর আওয়াজ পাওয়া যায়। একটানা কান্নার দরুন সে ক্লান্ত; শান্ত হইয়া মায়ের কোলে শুইয়া থাকে। ওয়াজেদ জবাবের আশায় নুরার দিকে তাকাইয়া থাকে।

দুয়ারে পাষাণ তালা (চতুর্থ কিস্তি)

তথ্যসূত্র:

তথ্যসূত্র:
1 কথোপকথন

বিজ্ঞাপন

Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আতহার তানিম
আতহার তানিম
1 year ago

খুব ভালো লাগতেসে। আল্লাহ লেখায় আরো বরকত ঢেলে দেন।

স্বত্ব © ২০২৩, যোগাযোগ | ই মেইল : jogajogbd.org@gmail.com

যোগাযোগ-এ প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি কিংবা শিল্পকর্ম লেখক অথবা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা অবৈধ৷