ইকবালপ্রকল্প-ভবন : মননের পলিমেথ ও চৈতনগ্রাফিতি

আহমাদ হাবীব শাকির

রওযায়ে মহব্বতে রসুলিল্লাহ : ইকবালচিন্তার সিনটেক্স :

শায়েরে বাঙাল হযরত কাজী নজরুল মুহাম্মদ ইকবালের শেরের তরজমা করতেসেন :

আল্লাহকে যে পাইতে চায়

হযরতকে ভালোবেসে

আরশকুরসী লওহো

না চাহিতে পেয়েছে সে

ইশকে রাসূলে ফানা হওয়ার পরম্পরা ও পেরাডাইম দুনিয়ার ইতিহাসে প্রতিদ্বন্দ্বিতার উর্ধ্বে, আসহাবে রাসূলের ইশক ছিল জানকুরবানের তুলনারহিত দৃষ্টান্ত। রাসূলে আরবির সশরিরি যুগ পেরিয়ে এই সদ্য সময়ে এসেও, সেই ইশকে বিগলিত হচ্ছে কত সৌভাগ্যপ্রাণ অস্তিত্ব। আশেকে রাসূলের সংযোগ নদির সঙ্গে সাগর ও পাহাড়ের অভিন্ন রুহের সংযোগের মত, এক ঐশ্বরিক ও ইলহামের সূত্রধারায় জারিত যেনোবা।

নববিযুগের বেন সাবেত হয়ে, আরব কাব্যধারার প্রথমসারির প্রধানতমা খানসার সিলসিলা আমাদের ইকবাল হয়ে এই বঙ্গের নজরুলকেও তাড়িত করেছিলো, নজরুল লিখেছিলেন মরুভাস্কর।

শাহিনে হিন্দুস্তা মুহাম্মদ ইকবাল শরির নিয়ে বসে থাকতেন ভারতবর্ষের পর্বতাবৃত গ্রামে, মনের সফর তার প্রবল স্পৃহায় ঘুরে বেড়াতো মদিনাতুর রাসুলের গলি গলি, তায়েফের প্রান্তর, আরদে মক্কার মুয়াজ্জম ধূলিকণায়।

এই সদ্য শতাব্দিতে, আমাদের অভিমানি কবি ফররুখ জাগৃত হয়েছিলেন ইশকের স্পন্দিত ঢেউয়ে। এই ধারায় যুক্ত হয়েছিলেন সৈয়দ হোসেন সিরাজী থেকে নিয়ে ঢাকার মওলানা আজিজুল, লিখেছিলেন ইশকের আশআর দিওয়ানে আজিজ।

ইকবালের মনন জ্বলসিত ও প্রকম্পিত হয়েছিল মক্কার দ্যোতিতে, হেরার জ্যোতিতে, জাবালে নূরের রুহবারিত প্রমতো শুশ্রূষায়। বালক ইকবাল গতিপথ বদলে দিলেন, তার সফর অসিম মক্কাপানে, তার রিহলা যুক্ত হলো ফিনায়ে দারিল আরকামের জগতব্যপ্ত নববি এলমের এসনাদে, অগ্রথিত অসিম সহস্রাব্দের কলকল ঢেউয়ে মিশে গেলেন হিন্দুস্তার মেধাস্বত্বের এক ঋষি রাজপৌরুষ।

ইকবাল ও অবগতিত লিটারেইচর : সমিতিবদ্ধতার ব্যবচ্ছেদ যেই পেরামিটারে :

লিটারেইচরের ব্যাপারটা দুনিয়ায় মোটাদাগে দুইভাবে বিস্তৃত হইসে। একে ত শক্তিবাদ ও জাগরণবাদি, শিল্পের দার্শনিক উদ্দেশ্যে একেই মৌল ধরে নেয়া হয়ে এসছে৷ যে শিল্পের তাড়না এই জাগরণবাদ ও মানববৃত্তিয়, ইসলামের ইস্পিরিটের সাথে বিরোধ করে না, এক্ষত্রে মোটাদাগে শিল্পের সঙ্গে রাবেতায় ইসলামের মিসআন্ডারস্টেইন্ডিং নাই। এইখানে সর্বাধিকতম আলোচিত খৈয়ামরে মেনশন করা যায়।

রেনেসাঁউত্তর যে ভোগ্য বস্তুবাদি আপাত মানবতাবাদি দর্শন বুদ্ধিবৃত্তির পরিসর আর কালচারাল স্পেইসে ছড়ি ঘুরিয়ে এসছে, সেই গ্রাসি বন্যায়, কি প্রাকৃতিবাদি ধর্ম কি আসমানি, ধর্ম্মশিল্পচিন্তায় বিকৃত হেজেমনি প্রবলতরো জায়গা করে নেয়। ফলশ্রুতিতে সর্বজনগ্রাহ্য আধ্যাত্মিক আইডেন্টিটির স্খলন শুরু হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পর্যন্ত ধরা যেতে পারবে। ফ্রয়েডিয় চিন্তায় যেমন প্রবৃত্তির তাড়নাই মানবিক গন্তব্য, শিল্পক্ষেত্রে এ মোটামোটি একক গ্রাসি হয়ে উঠল। এই এ্যার্গুমেন্টে এসে ইন্ট্রেস্টিং ব্যাপারগুলি থাকতে পারবে।

ইসলাম ও লিটেরেইচর, দুইটার গভিরতম বোধ হালের গতিবিধি দিয়া বিচার তাই সারল্যে ভরপুর ও স্থূল হইতে বাধ্য৷

ভারসাম্যহিন শিল্পি শ্রি ও এস্থেইটিকস বা নন্দনতত্ত্বে শিলিত ও মার্জিত গুণাবলির পরিবর্তে মানুষের দোষত্রুটি আনবিক ও বড় করে দেখে, ফলত পেটার্ন পাল্টে যায়, জন্ম হয় আধ্যাত্ম ও রূহহিন শিল্পের, ইকবাল যাকে লিটেরেইচর অভ ডেকাডন্স বা অধঃপতিত শিল্পে অভিহিত করেন।

শিল্পের গভির যাত্রার বাইরে স্থূল আয়না দিয়ে যে শিল্পযাত্রার বিচার, সে সাময়িকতা নির্ভর ও টেম্পরারি, সে জাজ ও প্রনিতিবিধান পরিসরের শক্তিতে বুদ্বুদ ছিল, গ্রহণের স্থলবন্দর ও জলসৈকত পাওয়া যায় কিনা সেই সেই বিভ্রম থাকেই ত বরং।

সাবকন্টিনেন্টে ইলহামি মিরাস : সূত্র ও সিলসিলাবর্গ, মারকাজি মাকাতিবে ফিকর :

মালিকুল হিন্দ এওরংযেব, শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেস সাব, মুজাদ্দেদ হযরত ইমাম থানোয়ি ও মুফাক্কের হযরত ইকবালকে উপমহাদেশের মুসলিম সিয়াসি ফিকরি ও সামাজিক সাংগঠনিক সংকটের মিমাংসায় আবশ্যিক সত্ত্বা বিবেচনা করে এগুনো ছাড়া এখানকার দ্বিনি তজদিদি সংকট ও সম্ভাব্য উদ্ভুত কাযিয়্যা ও বিভ্রম উত্তরণ দূরবিস্তারি ধরা যেতে পারবে। এই মানসচতুষ্টয়ের ইলমি ফিকরি ও সিয়াসি নযরের ওপর এখানকার সামাজিক ও রাজনৈতিক মিরাস অধিষ্ঠিত৷ জিন্নাহ থেকে নিয়ে মওদুদি হয়ে মওলানা নদভি, এরই প্রসন্ন ব্যাখ্যার বিবিধ তফসিল করছেন।

সিয়াসি প্রকল্পে কেন্দ্রভবন ও কাঠামোর মডেল এওরংযেব, ইলমি তাজদিদি ও তানকিদে শাহ সাব, ইসলাহ ও দাওয়ায় থানোয়ি, ফিকরিয়াতে ইকবালের মিরাস অধিষ্ঠা পেয়েছে।

ইকবালের সিয়াসি নযরকে মওদূদি প্রয়োগ করতে জামায়াতপ্রতিষ্ঠা করেন, সাফল্যের বিবেচনা সে আরেক ব্যাখ্যায় যায়। ইকবালের সবচে সফল ও মৌলিক তরজুমান যে নদভি, তার দলিল রাওয়ায়েয়ে ইকবাল বা নুকুশে ইকবাল। আরববিশ্বে ইকবালের দাওয়াহর ভাষ্য ও ফিকরিয়াত পৌছে দিতে সাইয়েদ নদভির সর্বোৎকৃষ্ট প্রচেষ্টার এই নযরানা। ইকবালের ওপর সহস্রাধিক গবেষণাগ্রন্থের মাঝে নুকুশে ইকবালএখনও সর্বোচ্চ স্থান নিয়া অধিষ্ঠিত।

আধুনিক কবিদের মাঝে, হালি ও ইকবালে নারিকেন্দ্রিক কাম ও যৌনভ্রষ্টতা স্পর্শ করে নি, সে প্রমাণ নুকুশে ইকবালে বিস্তর করা হয়ছে। ইকবাল তবু পৃথিবির শ্রেষ্ঠতম মৌলিক কবিদের একজনের স্থানে কায়েম, যার শায়েরি ও কালাম ব্যাখ্যা করেছে ইসলামের শাশ্বত আহ্বান অথচ কালের আয়না সামনে রেখে, অথচ কি কাব্যে কি চিন্তায়, তার প্রভাব দূরবিস্তারি হয়েই চলছে। আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্রপ্রকল্পে কালের চির অমর অনুপ্রেরণা হয় আছেন। ইকবাল বা আফ্রোআরবের আহমাদ শাওকি ব্লকরে চলমান যাত্রার প্রধান ভিনচিন্তায় উদ্ভাসিত করা যাইতে পারবে এ ইতিহাসের স্বিকৃতি হতে খুব দূরবর্তি নয়।

পারস্যপ্রতিভার ক্লাসিক যুগের পর ইকবালের চে বেশি আলোচিত কোনো মুসলিম কবি ও চিন্তক মানস এতটা আলোচিত হন নাই, আর তার সবচে সফল চৈন্তিক প্রায়োগিক ব্যাখ্যা সাইয়েদ নদভি বহন করেছেন।

, আলাপের এই ওপেরায়, এইখানে নোক্তা বা পয়েন্ট হয়, আকছর বাঙলাভাষি নদভি চর্চাকারিগণের মধ্যে নদভি আফকারের ফাউন্ডেশন নিয়া বহস ও সন্ধিৎসায় যেমন আগ্রহ দেখা যায় না, অধিক মওদুদিস্টগণও ইকবালরে পাকিস্তানের কাজী নজরুল ছাড়া মনে করেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। ইকবাল তবু মহাকালগামি, ইকবাল একখানা পৃথকিকরণ স্থাপনা ও চিহ্ন তার আগ ও পরের, গ্রিন হাইলাইটার।

রেওয়ায়তে ইকবাল : ভাষিক আঙ্গিক নির্মাণওপেরা :

ইকবালের উরদু জটিল, ইবারতও তাই৷ লিকুল্লি ফান্নিন রিজাল।

সামান্য পরে বুঝলাম, আমরা যারা হেজাযি আর আলতামাশে বুদ হয়ে এসছি, ইকবাল তাদের না। ইকবালের ইবারত কেবল ভাষাজ্ঞান দিয়া ঠাহর মসিবত পর্যায়ের। জেনারেশন গেইপ বলেও কথা আছে, কর্মক্ষেত্রের দ্বৈরথ বলেও কথা থাকতে পারবে।

ইকবালরে বুঝতে পরিভাষাজ্ঞান যেমন লাযেমান, ইকবাল যতটা না উরদু, উরদুর মাঝেও ফারসি অসিম।

পাঠ্যবইয়ে যে ইকবালরে পেয়েছি, সে ইকবাল ফাইলাসুফ ইকবাল না। কালামে ইকবালে, ইকবালরে পাইবেন ট্রেডিশন নিয়া কান্না করতে। আবার দেখা যাইবে, সুরাইয়া তারকার আফসোসে ইকবালের অন্তর্ভেদি আহ্বান। মনে হবে, গর্ত ফাক হও, ঢুকে পড়ি।

ইকবালের চিরন্তন ডাক মুসলিম ফিকরি পরিচয়ধারার সমস্ত চিন্তাশিল বিবেকরে হাজার বছর ধরে মগজের ভেতর কামড়াবে। ঘুমের ভেতর দুঃস্বপ্নে, অপারগতায় তারা কেঁদে উঠবেই—যেমন কাদত নদওয়ার বালক আবুল হাসান।

সেই সমস্ত কান্নার দায় ইকবালের, মূলস্বত্বও ইকবালের।

খিলাফাহউত্তর স্থবিরতা : সিয়াসি অবকাঠামোজুড়ে ইকবাল গতিধার কনস্ট্রাকশ্যন :

জানা কথা যে ইকবালরে ভাবা হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, উপমহাদেশিয় মুসলিম স্বাতন্ত্র্য পরিচয় ও চৈতন্যের উদ্ভাবক। ইকবালের লেখক জিবন মোটাদাগে দুভাগে অতিক্রম হয়ে গেছে, একে ত ভারতিয় জাতিবাদ প্রভাবিত, পরতঃ মুসলিম জাতিস্বত্বার প্রমত্ত ঢেউ। ইকবাল পরবর্তি সময়ের অন্যতম প্রধান মুফাক্কির সাইয়েদ নদভি ইকবালের এইহেন ইস্পিরিটে প্রভাবিত হয়েই রচনা করেছিলেন তার মহাকালজয়ি মেগনাম ওপাস মা যা খাসিরাল আলামবা ইসলাম এন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড। ইকবালকে আধুনিক তুরস্ক এমনকি সম্ভাবিত পরাশক্তি ইরানেরও জনক ভাবা হয়। তাঁর চিন্তা স্পর্শেই য়ূরোপে আসাদ বা আলিজা, আরবে সাইয়েদ কুতুব, হাসানুজ্জামান, এখওয়ানের নবজাগরণের দাবানল অভিমুখিতা লাভ করেছিল।

ইকবাল তার সময়ে সাবকন্টিনেন্টের মৌস্ট ওয়েল আংরেজি জানা লোক ছিলেন। লিখেছেন পনেরো হাজারের অধিক বয়েত, কাব্যশ্লোক৷ নয় হাজারই ফারসিতে, বাকি ছয় উরদু আরবি ও অপরাপর যবানে। ইকবালের বাঙলায়নে বিশেষভাবে সিদ্ধি পেয়েছিলেন ওপারের শঙ্খ ঘোষ, অমীয় চক্রবর্তী, সত্য প্রাসাদ প্রমুখ, এখানকার ফররুখ, আলি আশরাফ ভ্রাতৃদ্বয়। এছাড়াও নজরুলসহ বাঙলাভাষি শির্ষ কবিগণ তাঁকে তাদরিব ও তামরিনে ঋদ্ধিতা লাভ করেন।

শ্লোকসংকলন আফতাবলেখার দায়ে পণ্ডিত মৌলভি সৈয়দ দিদার শাহ তাকে কাফের ঘোষণা করেন। শেকওয়ালেখার পর সে দৃঢ়তায় নয়া পানি ঢালে। খানিক সংখ্যক প্রসিদ্ধ আলেমও তাতে সংযুক্ত হতে থাকেন। সময় ও ইকবাল বুঝাপড়ায় এবঙ ইকবালের স্বাতন্ত্র্য ব্যাখ্যায় পরে তা পষ্ট হয়। তারানায়ে হিন্দ‘-প্রভৃতি ভারতিয় জাতিবাদি শায়েরি ও তারান্নুম থিকেও রুজু করেন এবঙ স্বতন্ত্র মুসলিম আইডেন্টিটির উত্তপ্ত চেতনা নয়া করে আবিস্কার করেন।

ইকবালের চিন্তা দর্শনে বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়ে নিজস্ব চিন্তা নির্মাণে সক্ষম বাঙলাভাষি চিন্তক বুদ্ধিজিবি অগণন, উদাহরণত আবুল হাশেম থেকে সৈয়দ আলী, দেওয়ান আজরফ ও অতি সাম্প্রতিক কিংবদন্তি চিন্তক দার্শনিক এবনে গোলাম সামাদ।

প্রসঙ্গত বরেণ্য মুফাক্কির আলেমগণ কর্তৃক আল্লামা বা ইসলামি শাস্ত্রসংশ্লিষ্ট মহাজ্ঞানি লকব পাওয়া স্বত্বেও ইকবাল কেন দাড়ি রাখলেন না এমন অভিযোগ অনেকেই করেন এবঙ সময়ের খানিক চ্যুতগেয়ান লোকাদি সুন্নাহকে সে কারণে কটাক্ষ করতেও দ্বিধা করেন না, এর জবাব ইকবালআত্মজ জাভিদ ইকবাল পিতার সূত্রে বলেন, এটাকে ইকবাল তার নিজের অন্যতম কমতি বলে স্বিকার করে গেছেন।

বাঙালাভাষি ও বাঙালাবাসি ইকবালের সঙ্গে পরিচয়ের যোগসূত্র নির্মাণ বোধ হয় প্রাসঙ্গিক সূত্রেই উচিত। পাঠ ও চর্চার স্থিতি আপডেট রাখার চেষ্টা অহেতুক হবে না বলে আশা করা দুরাশা নয়। পরন্তু পস্টমডার্ন সময়ে ইকবালের ভূগোল ও মানচিত্রের খবর না রেখে কি সিয়াসি কি ফিকরি, মুসলিমচৈতন্য ধারা বিকল ও কাঠিন্যে গতিরোধ হতে পারে, ‌ইকবাল পাঠের উপযুক্ত পাঠক তাই ঠকতে পারেন মনে হয় না।

কালাম ও হেকায়াতি ডায়াসপারা : তপ্ত কলবের অশ্রুত বারিষা :

ইকবাল শব্দকে ইট বানিয়ে প্রাসাদ নির্মাণ করতে জানতেন৷ তার পর চতুরতার সঙ্গে সেই প্রাসাদে আগুন জ্বালিয়ে দিতেন৷ পাশে বসে ঋণি ফকিররা আফসোস করত, হৃদয় তাদের টুকরো টুকরো হয়ে যেত। অস্থির হয়ে যেত, উন্মাদ হয়ে যেত।

আল্লামা ড. ইসরারের ব্যাখ্যায় ইকবালকে দেখলাম, ইকবালের চিন্তা ও দর্শন, এমনকি সাঙ্গিতিক আবহ নির্মাণ পর্যন্ত পরিধিকে ওনি দাবি করছেন কুরআনেরই উপমাগত তাফসির। সত্যিইবা, ইকবাল বিনম্র শরাফতের সঙ্গে উদ্ধত স্বপ্ন ও হুংকার, ইকবাল বাঁধ না মানা প্রবলবেগে আগত বন্যা, তরুণ হৃদয়ের ঋণ জাগিয়ে তোলা কাফের আরবের বিদ্রোহি মুয়াযযিন বেলাল।

ইয়া আমিরাল মুফাক্কিরিন, ইয়া শায়েরাস শুয়ারা, আমার চোখ ও বুক আপনার প্রেমে বিমুগ্ধ, প্রেমিকার স্পর্শের উষ্ণতায় নির্ধারিত যে উত্তেজনার জমানো সুখ, সেগুলি আপনার প্রেমে পরাস্ত। আপনার দূরদৃষ্টির ড্রাগন চোখ, স্বয়ং হতবাক বিস্ময়। আপনার মেধার তুচ্ছখানি সদকা করে গেলে, আমরা এত ফতুর হতাম না হে আব্বাজান।

কালামে ইকবাল আমাদের ঘুমের রাতগুলি নষ্ট করে দেওয়া বেয়োনেট। এই হিনমন্য মুসলিম সময়ে, আপনি আত্মপরিচয়ের পকেটে রাখা আইডি কার্ডের ফটোকপি। আমরা মদ্যপ হয়ে কোন অচেনা নগরে চলে এসেছি, যুগের নারিসঙ্গে হারায়েছি আসহাবের উত্তরপ্রজন্মের পরিচয়। সুনাম ও জাতে উঠার ধান্ধায় যুগের সব হিপোক্রেট ও মুনাফেক আমাদের চিন্তার রাহবার।

আমরা কোথাকার কোন বেদ্দপ কোথাকার হয় আছি। লানাতুল্লাহে আলাল মুনাফেকিন। নারজু রাহমাতাক, নাখশা আযাবাক।

বিজ্ঞাপন

Subscribe
Notify of
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
JuWeL RaNa
JuWeL RaNa
1 year ago

আর্টিকেলটি বুঝতে পারি নি।
হয়তো আমার ব্যার্থতা লেখাটার গভীরতা বোঝার।

মাহফুজ তাসনিম
মাহফুজ তাসনিম
1 year ago

পুরোটাই পড়লাম।
আলহামদু-লিল্লাহ, খুব ভালো লাগলো।
শাকির ভাই —আমার এলাকার গর্ব। শাকির ভাই নিয়মিত হোন—এটাই একমাত্র চাওয়া আমার।

স্বত্ব © ২০২৩, যোগাযোগ | ই মেইল : jogajogbd.org@gmail.com

যোগাযোগ-এ প্রকাশিত কোনো লেখা, ছবি কিংবা শিল্পকর্ম লেখক অথবা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা অবৈধ৷